প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে জানিয়েছেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের আগের দিন রাত ১টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে তারেক রহমান খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে ৪৫ বার ফোন করেছিলেন এবং তাকে সকাল ৬টার মধ্যে তার বাসভবন ত্যাগ করতে বলেন।’
শনিবার তার ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করা ভিডিওটিতে আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরে সংসদে কল রেকর্ড উপস্থাপন করেন। ‘প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ ছাড়া জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য দেন না। বিএনপি এ বিষয়ে কখনো সাড়া দেয়নি।’
২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৪তম বার্ষিকীতে, এই ভিডিওটিতে বিডিআর বিদ্রোহের পটভূমি সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উত্থাপন করে।
ট্র্যাজেডিতে তাদের নিকটাত্মীয়দের হারিয়েছে এমন পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে সজীব ওয়াজেদ লিখেছেন যে বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে, ‘একটি রাজনৈতিক দল’ সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক গুজব সেল চালু করেছে।
তিনি আরও বলেছেন, তার প্রোফাইলে পোস্ট করা এই ভিডিওটিতে সেই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য রয়েছে।
ভিডিওটিতে বিডিআর বিদ্রোহের আগে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের তৎকালীন বিশেষ দূত জিয়া ইস্পাহানীর বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ রয়েছে। জিয়া ইস্পাহানী বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেন একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু না করার জন্য। ২০০৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার প্রস্তাব দেন, প্রধানমন্ত্রী যা প্রত্যাখ্যান করেন।
২০ ফেব্রুয়ারি জিয়া ইস্পাহানী খালেদা জিয়ার সঙ্গেও বৈঠক করেন। ভিডিওটিতে বৈঠকের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, ‘কার বা কাদের আহ্বানে জিয়া ইস্পাহানী বাংলাদেশে এসেছিলেন?’
আরও পড়ুন: ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
ভিডিওতে বলা হয়েছে, ‘বিডিআর বিদ্রোহের মাত্র চার দিন আগে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ দেশ ত্যাগ করার চেষ্টা করেছিলেন।’ তবে বিমানবন্দর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে ফিরিয়ে দেন। ‘তার দেশ ছাড়ার উদ্দেশ্য কি ছিল?’- এটাও প্রশ্ন।
ভিডিওতে আরও বলা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করা আসামিদের অনেকেই বিএনপি সরকারের আমলে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ‘২২ জন পলাতক বিডিআর সদস্যকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪ জনের চাকরির সুপারিশ করে ডিও লেটার ইস্যু করেছিলেন ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০৬ সালে ক্ষমতায় আঁকড়ে ধরার জন্য একটি মরিয়া চেষ্টা করেছিল। মঈন ইউ আহমেদ এবং সাদিক হাসান রুমিসহ সশস্ত্র বাহিনীর মুষ্টিমেয় উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা বিএনপি-জামায়াত সরকারের অন্ধকার দিকটি প্রকাশ করেছিলেন।’
বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ এবং কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদসহ নিহতদের অধিকাংশই ২০০৮ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ভিডিওতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরপরই পিলখানা গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৫৭ জন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ মোট ৭৮ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ‘এই অপূরণীয় ক্ষতি শুধু সশস্ত্র বাহিনীরই নয়, সমগ্র জাতিরও হয়েছে। নবগঠিত আওয়ামী লীগ সরকার সবচেয়ে বড় আঘাতের সম্মুখীন হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা ষড়যন্ত্রের ফল: বিএনপি
পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এক যুগ: নানা কর্মসূচিতে শহীদদের স্মরণ