তিনি বলেন, ‘দেশজুড়ে ভাস্কর্য অবমাননার মূল পরিকল্পনাকরী হচ্ছে বিএনপি।’
শনিবার নওগাঁর মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে কোনো আপস নেই: কাদের
দেশে বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধকে চ্যালেঞ্জ করা হলেও বিএনপি এর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলার সাহস দেখাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে নয়, বিএনপির রাজনীতিতেই ভয়াবহ দুর্দিন চলছে। তথাকথিত একদলীয় শাসনের অবসান ঘটাতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার যে ডাক তারা দিচ্ছেন তা প্রকৃতপক্ষে উন্নয়ন ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা।’
মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদুল হক মোল্লার সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সংসদ সদস্য মো. ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক, শহিদুজ্জামান সরকার ও আনোয়ার হোসেন হেলালসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়া হবে না: কাদের
এর আগে, ৭ ডিসেম্বর সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেছিলেন যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার পেছনে বিএনপির উসকানি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনাটি সরকার নিজেই ঘটিয়েছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি যদি বলি, বিএনপি করেছে…বিএনপি এখানে উসকানি দিয়েছে কি না আমরা দেখছি।’
‘দেশে স্থিতিশীলতা না থাকলে ক্ষতিতো আমাদের। আমরা কেন স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে যাব? আমি বলতে চাই, স্থিতিশীলতা যাতে নষ্ট হয় বিএনপি সে উসকানি দিচ্ছে বিভিন্ন আন্দোলন- কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ওপর ভর করে। এখন তারা আর কিছু না পেয়ে হেফাজতের ইস্যুতে ভর করছে কি না সেটা খতিয়ে দেখার বিষয়। কারণ তাদের নিজেদেরতো কিছু করার সামর্থ নেই,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:ভাস্কর্য ভাঙার পেছনে বিএনপির উসকানি আছে কিনা খতিয়ে দেখছি: কাদের
ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক:
রাজধানীতে জাতির পিতার একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের সৃষ্টি হয়। দেশে ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন কয়েকটি ইসলামিক রাজনৈতিক দলের নেতা। এমন পরিস্থিতির মাঝে গত ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে রাতের আঁধারে জাতির পিতার নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
তার আগে ২ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্কর্যের একটি অংশ কে বা কারা ভেঙে ফেলে।
আরও পড়ুন: একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবার মাথাচারা দিয়েছে: তোফায়েল
সর্বশেষ ১৮ ডিসেম্বর কুষ্টিয়াতেই বিপ্লবী বাঘাযতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ জানায়, কুমারখালী উপজেলার কয়া কলেজে স্থাপিত বাঘাযতীনের ভাস্কর্যটির ডান গাল ও নাক ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যে সহযোগিতা করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ৯ ডিসেম্বর মানহানির মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। তবে পর দিন আদালত এ মামলা খারিজ করে দেয়।
সাম্প্রদায়িক শক্তির ঔদ্ধত্য কোনোভাবে বরদাশত করা হবে না: মন্ত্রী রেজাউল
এদিকে, জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙা ও অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সাথে ভাস্কর্য, ম্যুরাল, প্রতিকৃতি ও স্ট্যাচুর পক্ষে সচেতনতা গড়তে ইসলামি ফাউন্ডেশন ও ইসলামি খতিবকে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাতে বলেছে আদালত।
বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৮ ডিসেম্বর এক রিটের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেয়।