ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ব্যাপক লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো লুট করা হচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে লাল, সবুজ ও হলুদ (আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে) শ্রেণিকরণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। লাল মানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মালিকরা এসব ব্যাংক লুট করেছে। তারা যাকে খুশি তাকে ঋণ দিয়ে ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া হওয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
সোমবার (২৭ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসব লুটেরা মালিকদের রক্ষায় ধ্বংসের দ্বাপ্রান্তে থাকা ব্যাংকগুলোকে সরকারি বা লাভজনক ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
অর্থনৈতিক অবস্থা অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অর্থের মূল্য প্রতিনিয়ত কমছে। ‘কিছুদিন আগে এক ডলারের বিপরীতে বিনিময় দর কমেছে সাত টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে আমাদের টাকা এত বড় অবমূল্যায়ন কখনো ঘটেনি। বর্তমানে এক ডলার কিনতে লাগে প্রায় ১২৫ টাকা।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, দেশের ঋণের পরিমাণ একশ’ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় সরকার জাতির বোঝা ভারী করে তুলছে। ‘এটা আমাদের সবার ঋণ। কিন্তু আমরা তা উপভোগ করছি না। হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ এটি ব্যবহার করে মিলিয়নিয়ার এমনকি বিলিয়নিয়ারাও হয়েছেন।’
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকসহ গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশের উপকূলীয় অঞ্চল যখন ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার দিকে মনোনিবেশ না করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন।
আরও পড়ুন: আজিজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য দায়ী সরকার, সেনাবাহিনীর সুনাম কলঙ্কিত: ফখরুল
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরূপ প্রভাব থেকে জনগণকে রক্ষা করা তাদের(সরকারের) প্রধান কাজ নয়। কারণ সরকার সমর্থিত সিন্ডিকেট ও দুর্নীতিবাজরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে, মানুষের পকেট কাটছে। এটা তাদের জন্য কোনো সমস্যা নয়।’
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটের প্রয়োজন নেই বলে সরকার জনদুর্ভোগ এবং জনঅসন্তোষ নিয়ে ন্যূনতমও উদ্বিগ্ন নয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমানের ওপর ক্ষুব্ধ, কারণ তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১০ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাননি।
তিনি আরও বলেন, 'কেন ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাস, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন, ব্যাংক লুটপাট, ক্রমবর্ধমান জাতীয় ঋণ, দুর্নীতি, অরাজকতা এবং সাবেক সেনাপ্রধান ও সাবেক পুলিশ প্রধানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তার সরকারের প্রধান উদ্বেগের বিষয় নয়। তাদের একমাত্র কাজ হলো তারেক রহমানকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি দেওয়া।’