সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘দেশে এখন দুর্নীতির মহা উৎসব চলছে। এই লুণ্ঠন এবং দুর্নীতি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে।’
সরকারি প্রকল্প নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মধ্যে টেলিফোনে কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পর মঙ্গলবার দলের চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
তিনি অভিযোগ করেন, মন্ত্রী থেকে শুরু করে এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং ক্ষমতাসীন দলের মেয়র ও চেয়ারম্যান; এমন কেউ নেই যে দুর্নীতির সুযোগ ব্যবহার করছেন না।
ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কয়েকজন সিনিয়র সদস্যসহ পুরো প্রশাসন দুর্নীতির এই চক্রে জড়িয়ে পড়েছে।’
সংবিধানের রক্ষক বিচার বিভাগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ এখন উত্থাপিত হচ্ছে বলেও তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অপকর্ম এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তারা এখন উন্মত্ত, চেষ্টা করেও তাদের আড়াল বা দমন করতে পারে না, কারণ সেগুলি কোনও না কোনওভাবে জনগণের সামনে প্রকাশ পাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘তাদের অপকর্ম এখন ভার্চুয়াল জগতে ভাসছে, তাদের অপকর্মের কুৎসিত ছবি ফাঁস হচ্ছে। বড় বড় দুর্নীতিবাজদের মুখোশ খসে পড়ছে।’
আরও পড়ুন: নতুন ইসি কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না: বিএনপি
আইনমন্ত্রী ও সালমান এফ রহমানের মধ্যে সাম্প্রতিক ফাঁস হওয়া কথোপকথন সম্পর্কে তিনি বলেন, এতে সরকারের দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি এখন জাতির কাছে একটি প্রমাণিত সত্য।’
ফখরুল বলেন, বিএনপিসহ দেশবাসী এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করলেও এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি আবারও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি কোনো বিলম্ব না করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানান।
ফখরুল বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এবং দেশের জনগণ এটা মেনে নিতে পারে না। বিএনপি বিচার বিভাগকে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত করার স্বীকৃত অপরাধ আলাদাভাবে বিবেচনা করার দাবি জানাচ্ছে।’
তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য তিনি আইনমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের পদত্যাগ দাবি করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, আমরাও চাই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনা হোক।
চাঁদপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণে শিক্ষামন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনদের দুর্নীতি এবং দুর্নীতিতে আরও কয়েকজন মন্ত্রী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের জড়িত থাকার বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনও তুলে ধরেন ফখরুল।