তিন দিনের ছুটির পর কর্মসপ্তাহ শুরু হওয়ায় সোমবার ঢাকা মহানগরী এবং অন্যান্য স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী দুটি সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) -এর কর্মকর্তারা বলছেন, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার পর সকাল থেকে ঢাকা শহর ও আশেপাশের এলাকায় বাড়তি চাহিদা মোকাবিলায় তাদের আরও বেশি লোডশেডিং করতে হবে।
ফলস্বরূপ, ঢাকা এবং আশেপাশের এলাকায় প্রায় ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতির মুখোমুখি হতে হয়। এই এলাকাগুলোতে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার ৯০০ মেগাওয়াটের চাহিদা রয়েছে। সারা দিন ন্যূনতম পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা দীর্ঘ লোডশেডিং করতে হয়।
এছাড়া ছুটির দিনে নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গী শিল্প এলাকাসহ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে ৫০০ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট ঘাটতি ছিল।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, আজ সকাল থেকে তার কোম্পানির আওতাধীন এলাকায় দিনের বেলায় ৬০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা মহানগরীতে আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা ১৭৫০ মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে ১১৫০ মেগাওয়াট পাচ্ছি। গরম আবহাওয়ায় মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদার আলোকে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে’।
সপ্তাহের শেষে এবং ছুটির দিনে লোডশেডিং ছিল প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট এবং ডিপিডিসি এলাকায় চাহিদা ছিল ১৪০০ মেগাওয়াট।
ডিপিডিসি’র প্রধান নির্বাহী স্বীকার করেছেন যে ডিপিডিসির পরিষেবা দেয়া কিছু এলাকায় গ্রাহকরা দিনে পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎহীন থাকছেন।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আন্তরিক দুঃখপ্রকাশ করা ছাড়া আমাদের কিছু করার নাই… আমরা যা পাই তা সরবরাহ করি।
ডিপিডিসি ঢাকা শহরের মধ্য, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ এবং নারায়ণগঞ্জের কিছু অংশে বিদ্যুৎ বিতরণ করে থাকে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, সেনানিবাস এবং বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতালসহ বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ প্রধান স্থাপনা (কেপিআই) ডিপিডিসি এলাকায় অবস্থিত।
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাউসার আমীর আলী তার এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় একই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
ক্ষেত্র বিশেষে ডেসকো এলাকার গ্রাহকদের সারাদিনে পাঁচ ঘন্টার বেশি লোডশেডিং পোহাতে হয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ছুটির শেষ তিন দিনের তুলনায় আজ লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেশি।
ডেসকো ঢাকা শহরের উত্তর ও পূর্বাঞ্চল এবং টঙ্গী শিল্প কেন্দ্রে বিদ্যুৎ বিতরণ করে।
কাউসার উল্লেখ করেন, ডেসকোর সরবরাহ অঞ্চলের দৈনিক ১০৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ২৯৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়। গরমের কারণে ঢাকা শহরে বিদ্যুত সরবরাহের চাহিদা আরও বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় বিজিএমইএ
বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আগামী মাসে আরও উন্নতি হবে: নসরুল হামিদ