কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি না করায় চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় রোগীর স্বজন তিন ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, নগরীর নোয়াগাঁও এলাকার মোজাম্মেল হোসাইন অয়ন, আবদুল্লাহ আল মামুন অনন্ত ও আবদুল কাদের অনিক।
আরও পড়ুনঃ বগুড়ায় বিষাক্ত মদপানে মৃত্যু, হোমিও ডাক্তার আটক
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার জানান, নগরীর নোয়াপাড়া এলাকার মনিপাল এএফসি হসপিটাল (সাবেক ফরটিস হাসপাতাল) নামের ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তানভীর আকবরের ওপর হামলা ও হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো অভিযোগে সোমবার সকালে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। ওই চিকিৎসক নিজেই তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও পাঁচ জনকে আসামি করে মামলা করেন। সেই মামলায় ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ করোনাকালে অনলাইনে প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরামর্শ ‘সহজ হেলথে’
মামলা সূত্রে জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হোসাইন নামের এক রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় কুমিল্লা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ঢাকার যেকোন হাসপাতালে আইসিইউতে স্থানান্তরের নির্দেশনা দেওয়া হয়। রোগীর স্বজনরা রোববার (২৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাকে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি নিতে রাজি হয়নি। এরপরও রোগীর স্বজনরা ভর্তির জন্য জোর করে। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ৫ থেকে ৬ জন মিলে চিকিৎসক তানভীরকে কিল ঘুষি দিতে থাকে। পরবর্তীতে লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করা হয়।
হামলার শিকার ডা. তানভীর আকবর জানান, ‘জরুরি বিভাগে রোগীটি আসার পর চেকআপ করি। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সঙ্গে আসা স্বজনদের উন্নত চিকিৎসার জন্য হাই-ফ্লু ন্যাসাল ক্যানুলা ও আইসিইউ সমৃদ্ধ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু তারা হসপিটালে ভর্তির জন্য বারবার চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে তারা।’
আরও পড়ুনঃ কুমিল্লায় একদিনে সর্বোচ্চ ৮৩৬ শনাক্ত, মৃত্যু ১০
তানভীর আকবর আরও বলেন, ‘হামলার সময় আমাকে বাঁচাতে আসলে হাসপাতালের আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়। এছাড়া হাসপাতালের সম্পদের ক্ষতি সাধন করে ও অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে সটকে পড়েন তারা। এ ঘটনায় আমি কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের করি। ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, গ্রেপ্তার তিনজনকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে, হামলার সময় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন কুমিল্লা সিভিল সার্জনসহ জেলায় কর্মরত চিকিৎসরা।