খুলনায় মাছের ঘেরের নিরাপত্তাকর্মী কুদ্দুস শেখ হত্যা মামলায় বাবা-ছেলেসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সোমবার দুপুরে খুলনার সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-ফুলতলা উপজেলার বেগুনবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার মাহবুব মোল্যা (৩০) ও তার বাবা সিদ্দিক মোল্যা (৫০) ও বেগুনবাড়ি পূর্বপাড়া এলাকার আনছার মোড়লের ছেলে ইসরাইল মোড়ল (৩৫)।
আরও পড়ুন: সিলেটে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
আরও পড়ুন: যশোরে স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৫ মে রাতে মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম শেখের চাচা কুদ্দুস শেখ মৎস্য ঘেরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই রাত ২টার দিকে ঘেরের পাশ দিয়ে টর্চ লাইট মেরে ঘোরাফেরা করছিলেন স্থানীয় মাহবুব মোল্যা, ইসরাইল মোড়ল ও সিদ্দিক মোল্যা। এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কুদ্দুস শেখ তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয় এবং তাকে জীবননাশের হুমকি দেয়। পরেরদিন ১৬ মে সকালে বাদীর চাচা কুদ্দুস শেখ বিষয়টি ভাতিজা রফিকুল ইসলাম ও স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে জানায় এবং সালিশ ডাকার উদ্যোগ নিলে আসামিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়। এরপর ১৭ মে সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে মামলার আসামি ইসরাইল ও মাহবুব মোল্যা তাদের মাঠের স্যালো মেশিন নষ্ট হয়েছে এমন কথা বলে কুদ্দুস শেখকে মেরামতের অনুরোধ জানান এবং মেরামত বাবদ তাকে মজুরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কুদ্দুস শেখ সরল বিশ্বাসে ইসরাইল, মাহবুব মোল্যার সাথে মেশিন মেরামতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ওই রাতে তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। পর দিন সকালে মাছের ঘের থেকে অনুমানিক ৩০০ গজ পশ্চিমে সোহরবের মাছের ঘের থেকে কুদ্দুসের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় বাগেরহাটে মাদরাসা সুপারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
এ ঘটনার ঘেরের মালিক রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মাহবুব মোল্যা, ইসরাইল ও সিদ্দিক মোল্যাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য আমলে নেয় খুলনার দায়রা জজ আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার মামলার রায় দেয়া হয়।