মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো. ফিরোজ উদ্দীন চৌধুরী তাসফিয়ার আত্মহত্যা জনিত মৃত্যু হয়েছে মর্মে আদালতে সম্পূরক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
আদালতে জমা দেয়া রিপোর্টে তদন্ত সংস্থা পিবিআই জানিয়েছে, তাসফিয়ার শরীরে বিষক্রিয়ার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, ধর্ষণের কোনো প্রমাণও মিলেনি। পানিতে ডুবে তাসফিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: হত্যা নয়, তাসফিয়া পানিতে ডুবে আত্মহত্যা করেছে: পুলিশ
বুধবার নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) শাহাবুদ্দিন আহমদ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৭ ডিসেম্বর এটির উপর শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২মে নগরীর পতেঙ্গায় সমুদ্র উপকূলে পাথরের ওপর উপড় হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকাবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আগের দিন মঙ্গলবার রাতে তাকে পতেঙ্গা সৈকতের ১৮ নম্বর ঘাটে দেখে স্থানীয়রা। পরে লাশের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাসফিয়া আমিনের বাবা থানায় গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নিহত সেই তাসফিয়ার বাবার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তাসফিয়া নগরীর সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তাদের গ্রামের বাড়ি টেকনাফের ডেইলপাড়া এলাকায়। তাসফিয়া পরিবারের সঙ্গে নগরীর ওআর নিজাম আবাসিক এলাকার তিন নম্বর সড়কের কেআরএস ভবনে থাকতো। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার (১ মে) সন্ধ্যায় তাসফিয়া তার ছেলেবন্ধু আদনান মির্জার সঙ্গে রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল।
এ ঘটনায় পুলিশ ওইদিন রাতে তাসফিয়ার বন্ধু আদনানকে আটক করে। ঘটনার পরদিন ৩ মে দুপুরে এ ঘটনায় তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।আদনানকে প্রধান করে ওই মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলো- সোহেল (১৭), শওকত মিরাজ (১৭), আসিফ মিজান (১৭), ইমতিয়াজ ইকরাম (১৭) ও ফিরোজ (৩০)। পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন:ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি: তালায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা!
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এই মামলার সব আসামি গ্রেপ্তার আছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সব তথ্য রিপোর্টে বোঝা যাচ্ছে এটি আত্মহত্যা। ময়নাতদন্তে তাসফিয়ার মৃত্যু পানিতে ডুবে হয়েছে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে। কারণ তাসফিয়ার পেটে প্রচুর পানি পাওয়া গেছে। শ্বাসনালীতে রয়েছে কাঁদা-ময়লা।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ওই দিন সৈকতে ঘুরতে যাওয়া মো. কুদরুত ই ইলাহী, আশিকুর ইসলাম, এম এ খান আন্না, আবু তাহের, নুরুল আবছার, নুর হোসেন, এবং বোট মাঝি লোকমান হোসেন, তৈল ব্যবসায়ী হারুণ, কৃষক মো. হোসেন, চা দোকানদার মো. মুনছরকে সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এ সাক্ষীর তালিকায় মোট ১৬ জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বখাটের উৎপাত থেকে বাঁচতে মাগুরায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
এর আগে ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর চার মাস তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশ তাসফিয়া হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিল। এতে আদালতে নারাজি দেয় মামলার বাদী। ফলে আদালত পূণঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নিদের্শ দেন।