চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপেক্ষর সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় ফলপ্রসূ আলোচনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরে চলা লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে বন্দর ভবনে স্থানীয় সংসদ সদস্য, বন্দর চেয়ারম্যান, লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন, লাইটারেজ শ্রমিক ফেডারেশন ও ঠিকাদার সমিতির নেতাদের যৌথ সভা শেষে শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
জানা যায়, পতেঙ্গা চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু ও লাইটারেজ শ্রমিকদের কাছ থেকে ঘাটে টাকা না নেয়ার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন লাইটার জাহাজ শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি শেখ মোহাম্মদ ঈছা মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বন্দর ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় ফলপ্রসূ আলোচনার প্রেক্ষিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘাট সম্পর্কিত লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের যে দাবি ছিল তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দেয়ায় কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় নেতারা।
আরও পড়ুন: লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ
রাতে বন্দর ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন, লাইটারেজ শ্রমিক ফেডারেশন ও ঠিকাদার সমিতির নেতৃবৃন্দ এছাড়াও স্থানীয় সাংসদ এম এ লতিফ ও বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহানসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে চেয়ারম্যান ও পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে শুক্রবার ভোর থেকে ধর্মঘট
শুরু করে লাইটার শ্রমিকরা। ফলে দিনভর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস, কর্ণফুলীর ১৬ ঘাটে পণ্য লোড-আনলোডসহ চট্টগ্রাম থেকে নদী পথে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকে।
বাংলাদেশ লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নবী আলম জানান, গতবছর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন চরপাড়া এলাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি ঘাট নির্মাণ করে। শ্রমিকরা সেই ঘাট ব্যবহার করে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ সেটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়। তারা ঘাট ব্যবহারে দশ টাকা মাশুল নির্ধারণ করে। এ নিয়ে ইজারাদারের লোকজনের সঙ্গে শ্রমিকদের প্রায়ই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে থাকে। গত ৩ নভেম্বর শ্রমিকদের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনা ঘটে। কিন্তু পতেঙ্গা থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নেয়। এ অবস্থায় শ্রমিকরা চরপাড়া ঘাট ত্যাগ করে আনোয়ারায় পারকি সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকা থেকে লাইটারেজ জাহাজে ওঠানামা শুরু করেন। কিন্তু সম্প্রতি বন্দর কর্তৃপক্ষের ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে পারকি থেকে জাহাজে ওঠানামা বন্ধ করে দেন। এরপর শ্রমিকরা চাইনিজ ঘাট এলাকা থেকেও জাহাজে ওঠা নামার চেষ্টা করলে বন্দর কর্তৃপক্ষ সেখানেও অভিযান পরিচালনা করে। এরপর শ্রমিকদের লাগাতার ধর্মঘট শুরু করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম পৌঁছেছে ইউক্রেনের সাড়ে ৫২ হাজার টন গম
চট্টগ্রামে ডাম্পিং এ ফেলে দেয়া মিট অ্যান্ড বোন মিল পণ্য পাচার কালে ১০ ট্রাক জব্দ