এ লক্ষ্যে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান ঈগলরেল কনটেইনার লজেস্টিকসের (ইউএসএ) সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে বন্দর চেয়ারম্যন কমডোর জুলফিকার আজিজ, (ই), পিএসসি, বিএন, এবং আমেরিকান প্রতিষ্ঠান ঈগলরেল কনটেইনার লজেস্টিকসের (ইউএসএ) পক্ষে মিস্টার মিকি ওয়েচোচিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য এটি একটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কনটেইনার মুভমেন্টের পরিমাণ অন্তত ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। জাহাজের হুক পয়েন্ট থেকে ডেলিভারি পয়েন্টে কিংবা রিসিভিং পয়েন্ট থেকে জাহাজের হুক পয়েন্টে ঈগলরেলের সাহায্যে কনটেইনার আনা-নেয়ার ব্যবস্থা করা গেলে বন্দরের অভ্যন্তরে কোনো গাড়ি ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, বর্তমানে কনটেইনার ও কার্গো পরিবহনের কাজে বন্দরে প্রতিদিন পাঁচ হাজারের বেশি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, কনটেইনার মুভারসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি প্রবেশ করছে। এসব অতিরিক্ত গাড়ির কারণে বিমানবন্দর সড়কসমেত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যার প্রভাব পড়ে পণ্য পরিবহনসহ নাগরিক জীবনযাত্রায়। ‘ঈগলরেল ওভারহেড কনভিয়ান্স সিস্টেম’ ব্যবস্থা চালু হলে পণ্য সরবরাহে গতি আসার পাশাপাশি বন্দর কেন্দ্রিক যানজট নিরসন হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি স্বাক্ষরের আগে ‘ঈগলরেল কনটেইনার লজেস্টিকস (ইউএসএ)’ শীর্ষ কর্মকর্তারা এরই মধ্যে দুই দফা চট্টগ্রাম বন্দর পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সমীক্ষাও সম্পন্ন করেছেন। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈগলরেল চালুর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। আমেরিকান এই কোম্পানি বিশ্বের উন্নত দেশের বন্দরগুলোতেও এ প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে। প্রযুক্তিটি ক্যাবল কারের মতো। ভূমি থেকে অন্তত চল্লিশ ফুট ওপরে স্টিল কাঠামোয় ট্র্যাক তৈরি করা হয়। রেললাইনে ট্রেন চলে ট্র্যাকের ওপর দিয়ে। কিন্তু ‘ঈগলরেলে’ নিচের দিকে কনটেইনার ঝুলতে থাকে। ক্যাবল কারের মতো ঈগলরেল কনটেইনারটি টেনে নিয়ে গিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে খালাস করবে।
বন্দর সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম বন্দররের এনসিটি ইয়ার্ড থেকে ওভার ফ্লু ইয়ার্ড পর্যন্ত ‘ঈগলরেলে’র দুইটি ট্র্যাক স্থাপনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ঈগলরেলের মাধ্যমে ঘণ্টায় কমপক্ষে তিন’শ টিইইউ কনটেইনার মুভমেন্ট সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ‘ঈগলরেল কনটেইনার লজেস্টিকস (ইউএসএ)’ এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- মিস্টার স্কট হারপার, মিসেস সানিয়া ইরউইন, মাসুদ জামিল খান, এম সামায়াল।
চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বন্দরের যুগ্ম সচিব, সদস্য (অ্যাডমিন ও প্লানিং) জাফর আলম, পরিচালক (প্রশাসন) মামুনুর রশিদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আমিনুল ইসলাম, প্রধান অর্থ ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, পরিকল্পনা প্রধান মাহবুব মোর্শেদ চৌধুরী, পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, উপ-প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মির্জা রাকিবুল ইসলাম, প্লান্ট ম্যানেজার হাবিবুল্লাহ আজিম, অথরাইজড অফিসার গৌতম বাড়ৈ, প্রধান প্রকৌশলী (পুর) মাহমুদুল হোসেন চৌধুরী, উপ সচিব (সমন্বয়) আজিজুল মওলা।