প্রকৃতি পুড়ছে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে। ঘরে ও বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। একটানা অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার মানুষ।
বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে জনজীবন অস্থির হয়ে পড়ছে।
এরই মধ্যে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: পাবনার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি
এছাড়া বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) মধ্যরাতে ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হলেও গরম কিন্তু কমেনি।
চুয়াডাঙ্গা কোর্টপাড়ার বাসিন্দা ইমরান শেখ বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে কিছুই করা যাচ্ছে না। বিকাল হলেই আকাশ মেঘলা হয়ে আসে। কিন্তু আবার সেই সকাল হয়, তখন প্রচণ্ড রোদে অসহ্য গরম অনুভূত হয়।
চা বিক্রেতা শাহজালাল বলেন, এই গরমে বিক্রি কম। প্রচুর মানুষ আমার দোকানের বেঞ্জে শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছে। তাড়াতাড়ি এই গরম কমুক।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, শুক্রবার বিকালে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যেটা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ এবং দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর এই অসহ্য গরম অনুভূতি হওয়ার কারণ বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি। এ পরিস্থিতি থাকবে আরও কয়েকদিন। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছর এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মৃদু তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা যদি ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে, তবে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ।
আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে তা হয় তীব্র বা প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। আর ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলে তা হয় চরম বা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
এদিকে, এই ধারাবাহিক তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি আর ভোগান্তি নেমে এসেছে। এই তাপমাত্রায় অতিষ্ঠ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এদিকে, গরমের কারণে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে গরমজনিত কারণে ২৫০ এর বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এ অবস্থায় অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আউলিয়ার রহমান।
তিনি বলেন, বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে হবে। তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। তাই যতটা সম্ভব ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে শিশু রোগীসহ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তাপমাত্রা কমে এলে রোগীর সংখ্যা কমে যাবে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় রাতে বৃষ্টি দিনে সূর্যের চোখ রাঙানি, রেকর্ড তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি
তাপমাত্রা বৃদ্ধি: পিরোজপুরে এক সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৮ ডায়রিয়া রোগী