চুয়াডাঙ্গায় এক কুয়েত প্রবাসীর স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে জেলার সদর উপজেলার নতুন যাদবপুর গ্রামে গৃহবধূর নিজ ঘরে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
এঘটনায় ওই রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় স্বামী স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা
নিহত জেসমিন খাতুন ওরফে আয়না খাতুন (৩৮) ওই গ্রামের কুয়েত প্রবাসী হাবিবুর রহমান হাবিলের স্ত্রী। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আটক ব্যাক্তিরা হলেন, একই গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে হাসান আলী (২৮), মৃত বাহার লস্করের ছেলে আব্দুর রহমান (৫২) ও সমান মন্ডলের ছেলে মামুন মন্ডল (২৭)।
স্থানীয়রা জানান, গত ২০ বছর আগে ঝিনাইদহ হরিনাকুন্ডু উপজেলার কেসমত গোড়াগাছা আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে আয়না খাতুনের সাথে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মৃত হাতেম মন্ডলের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিলের বিয়ে হয়। সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে ১৮ বছর আগে কুয়েতে পাড়ি দেন হাবিল। সেই থেকে মামুন মন্ডল আয়না খাতুনকে বিরক্ত করতো। মঙ্গলবার মধ্যরাতে খুন হন আয়না খাতুন। সেসময় বাড়ির প্রধান ফটক ও ঘরের মূল ফটক বন্ধ ছিল। তার চিৎকারে বাড়ির আশপাশের সবাই ছুটে আসেন। কিন্তু তার আগেই মারা যান আয়না খাতুন। পরে খবর দেয়া হয় পুলিশে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে এসে লাশের পাশ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পাবনায় বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা
নিহতের মেয়ে তাসমিন বলেন, আমার মাকে কয়েকদিন ধরে মোবাইলে কেউ বিরক্ত করছিল শুনেছি। মঙ্গলবার সিম পরিবর্তন করেন মা। কি কারণে আমার মাকে হত্যা করেছে আমি জানি না। আমি আমার মায়ের হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয়দের ধারণা, বাড়ির প্রাচীর টপকে বাথরুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে ঘরের মধ্যে ঢুকে আয়না খাতুনকে হত্যা করা হয়।
সরোজগঞ্জ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক নিখিল অধিকারী জানান, কারও একার পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। ধারণা করা হচ্ছে, কয়েকজন মিলে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সকাল ৯টার দিকে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, ধর্ষণ হয়েছে কি না? তা ময়না তদন্তের পরই জানা যাবে।
আরও পড়ুন: নিজের মেয়েকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে মা আটক
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি, এক জোড়া হ্যান্ডগ্লাভস ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।