ঠাকুরগাঁও জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি উদ্বোধনের পর থেকেই পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে, তখন থেকেই ঝুলছে তালা।
ঠাকুরগাঁও জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল শহরে যানজট কমানোসহ যাত্রীদের সুবিধার্থে ২০০৩ সালে নির্মাণ করা। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর ঘটা করে উদ্বোধনও হয়। এরপর ২০ বছর পার হলেও যাত্রীদের কোনো কাজেই আসেনি দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত টার্মিনালটি।
দীর্ঘদিন পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় এখন তা হয়ে পড়েছে ব্যবহার অনুপযোগী। কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাকেই এর জন্য দায়ী করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে ৫ বিঘা জমির উপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয় বাস টার্মিনালটি। তৎকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া এ টার্মিনালের উদ্বোধন করেন। এরপর আর ব্যবহার করা হয়নি এটি।
আরও পড়ুন: সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল সার্ভিস কাঁচপুরে স্থানান্তর করা হবে: মেয়র তাপস
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা মহাসড়কের পাশেই অস্থায়ী কাউন্টার বসিয়ে বিক্রি করছেন বিভিন্ন রুটের বাসের টিকিট। অথচ টার্মিনালটিতে টিকিট কাউন্টার, ওয়াশ রুম, শপিংস্টোর ও বসার ব্যবস্থাসহ সাধারণ যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রয়েছে। এত সুবিধা থাকার পরও রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে বাসে ওঠানামা করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় যানজটের পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে টার্মিনালটি ব্যবহার না হওয়ায় ভবনের ভেতর নেশাখোর ও ভবঘুরেদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় শিগগিরই টার্মিনাল সংস্কার করে তা চালুর দাবি যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে এই প্রতিবেদক দেখতে পান, ঠাকুরগাঁও জেলার একমাত্র বাস টার্মিনালটি জনশূন্য। দুটি বিশ্রামাগার ও একটি টিকিট কাউন্টার থাকলেও তা তালাবদ্ধ। পরিষ্কার না করায় ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে ভবনের চারপাশ। ভেঙে পড়েছে দরজা-জানালা। ভেতরে বেশ কয়েকটি বিকল বাস ফেলে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে: মেয়র তাপস
দিনাজপুর-পঞ্চগড়ের যাত্রীরা বাসে ওঠানামা করছেন ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে। স্থানীয়রা জানান, টার্মিনাল থাকার পরও ঝুঁকি নিয়ে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বাস থামিয়ে যাত্রীরা ওঠানামা করছেন। এতে দুর্ঘটনা যেমন ঘটছে, তেমনই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অথচ টার্মিনাল নির্মাণের পর দুই দশক পার হলেও তা চালু হয়নি এখনো। এর পেছনে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
কয়েকজন যাত্রী জানান, তারা বিভিন্ন কাজে নিয়মিত ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করেন। টার্মিনালে বাস না থাকায় বাসের জন্য দীর্ঘ সময় সড়কের পাশে চায়ের দোকানে অপেক্ষা করতে হয় তাদের। এ সময় বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও সে উপায় নেই।
টার্মিনাল বিষয়ে বাস মালিক সমিতির নেতারা কথা বলতে রাজি না হলেও উপজেলা প্রশাসন জানালেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি দ্রুত চালু করতে বাস মালিক ও পৌরসভার সঙ্গে আলোচনা করব। আমরা চাই যেন এর যথাযথ ব্যবহার হয়। সাধারণ মানুষ যেন সেবা পায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করব।’