তিস্তার তীব্র ভাঙনে কুড়িগ্রামের রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের তিনটি মসজিদ, প্রথামিক বিদ্যালয়সহ পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, গাছপালা ও শতশত একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজারহাটের তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের কারণে তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়। ফলে গত এক মাসে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশাম, নাখেন্দা ও খিতাবখাঁ মৌজার তিন শতাধিক বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ফলে বসতভিটে হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবতর জীবন-যাপন করছে অনেক পরিবার।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে বিপদসীমার উপরে পদ্মার পানি, তীব্র ভাঙন
সরিষাবাড়ি ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, ঈদুল আজহার আগে থেকে ভাঙন চলছে। বর্তমানে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এবারের ভাঙনে এই তিনটি মৌজার অধিকাংশ জায়গাই নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে বলেও তিনি জানান।
খিতাবখাঁ বড়দরগা গ্রামের আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘এই নিয়্যা তিনবার বসতবাড়ি নদী নিয়ে গেলো, এল্যা বেটাবেটি নিয়ে কোটে থাকিম, কোটে বাড়ি তুলিম।‘
এদিকে, উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ, চর-খিতাবখাঁ, গতিয়াশাম, সরিষাবাড়ি ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি, তৈয়বখাঁ, চতুরা, কালিরহাট, চরবিদ্যানন্দসহ ১০টি গ্রামে দফায় দফায় নদী ভাঙনে চলতি মৌসুমে ৫ শতাধিক বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া, এই ১০টি গ্রামের সহস্রাধিক বসতভিটাসহ তৈয়বখাঁ বাজার, কালিরহাট বাজার, বুড়িরহাট বাজার, সরিষাবাড়ি বাজার, তৈয়বখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিরহাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি ইউনিয়নের আরও ৩টি মসজিদ, মন্দির, স্থাপনা ও শতশত একর ফসলি জমি হুমকির মুখে পরেছে।
আরও পড়ুন:যমুনার ভাঙনে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ভাঙন কবলিত চার স্থানে জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে গতিয়াশাম, নাখেন্দা ও খিতাবখাঁ মৌজায় জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ সম্ভব হবে না।’