স্থানীয়দের আশঙ্কা, বালু উত্তোলনের ফলে চরম হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীর রক্ষার কাজে ব্যবহৃত পাউবোর কয়েক লাখ টাকার জিও ব্যাগ ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ঘর-বাড়ি।
আরও পড়ুন:তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে কয়েকটি দেশের সাথে আলোচনা চলছে: প্রতিমন্ত্রী
জানা গেছে, গত বর্ষা মৌসুমে উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের কর্পুরা এলাকায় তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন শুরু হয়। এই ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও জাপা নেতা আতিয়ার রহমান মুন্সির পৈত্রিক বসত বাড়িও। পরে পাউবো কর্তৃপক্ষ নদীর ভাঙন ঠেকাতে সেখানে ২৫০ মিটার এলাকায় প্রায় ১০ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেন। সেবার কিছুটা হলেও রক্ষা পায় এলাকার মানুষজন।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপের দাবিতে মানববন্ধন
জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের একটু দূরেই গত ৮-১০ দিন ধরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর ভূগর্ভস্থ থেকে অবাধে বালু তুলছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে ইউএনবির এ প্রতিনিধি দেখেন, তিস্তা নদীর ধু-ধু বালুচরের একটি কোলা থেকে অবাধে বালু তুলছেন চেয়ারম্যানের লোকজন। আর এসব বালু চলে যাচ্ছে ওই চেয়ারম্যানের নির্মাণাধীন একটি আলিশান বাড়ি এবং পুকুর ভরাটের কাজে।
বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চেয়ারম্যানের হুকুমে বালু তুলতেছি। চেয়ারম্যান বলে দিছে, ‘উপরে যা করা লাগবে, আমি করব, তোমরা বালু তোলো। আতিয়ার মুন্সি ও তার ভাই মোশারফ মুন্সির নির্দেশে মেশিন লাগাইছি’।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, কয়েকদিন ধরে ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার মুন্সি বালু তুলছেন। গত বন্যায় এ এলাকায় তীব্র ভাঙনে বেশ কিছু ঘর-বাড়ি ও আবাদী জমি নদীতে চলে গেছে। পরে পাউবোর জিও ব্যাগ ডাম্পিং করার কারণে কিছুটা রক্ষা হয়।
এর আগেও চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার লোকজন তিস্তা নদী থেকে অবাধে বালু তুলে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীতে যাত্রীবাহী নৌকাডুবি, নিখোঁজ ১০
এ বিষয়ে দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আতিয়ার রহমান মুন্সির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কুড়িগ্রাম পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, ‘কয়েকমাস আগে ওই এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে আমরা ১০ হাজারেরও বেশি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছি। এখন রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে বিষয়টি দুঃখজনক।’
উপজলা নিবার্হী অফিসার নুর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ঘটনাস্থলে লোক পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।’