কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণের ফলে ঝিনাইদহের নিম্নাঞ্চলুগলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা না থাকার ফলে সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারের ত্রিমোহনি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২০ চাতাল ও বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
একই সাথে ফসল উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকর ও চাতালে মালিক-শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: বন্যার আশঙ্কা: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
এদিকে, প্রায় দুই মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে চাল উৎপাদন কার্যক্রম। এতে কোটি টাকার লোকসান হয়েছে শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চাতাল মালিকরা। এ অবস্থায় বেকার হয়ে অসহায় দিন কাটাচ্ছেন চাতালগুলোতে কর্মরত প্রায় দুই শতাধীক শ্রমিক। এছাড়া সাধুহাটি ও সগান্না ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বর্ষার পানি নিষ্কাণের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা ফসলের ক্ষতি হবার আশঙ্কা করছেন।
শনিবার সরেজমিনে ত্রিমোহনি চাতাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ওই এলাকার চাতালগুলোর পাশে একটি বিল ছিল। এই বিল দিয়ে এসব নিচু এলাকার পানি নিষ্কাষণ হত। কিন্তু প্রায় এক বছর আগে শুকনো মৌসুমে এই বিল এলাকায় পুকুর খনন করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। যার ফলে পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এতে কয়েকদফা বৃষ্টিতে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
চাতাল শ্রমিক আবু তালেব জানান, চাতালে কাজ করে সংসার চলে। কিন্তু বৃষ্টিতে পানি জমে প্রায় দুই মাস চাতাল বন্ধ রয়েছে। ফলে রোজগার না থাকায় কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। কখনও কখনও তিন বেলাও খাবার জুটছে না।
জলাবদ্ধতার শিকার একটি বাড়ির মালিক ইমান আলী বলেন, ‘পাশেই পুকুর কেটে বাধ দেয়ার ফলে বৃষ্টিতে এখানে পানি জমে গেছে। এই পানি বের হতে না পেরে আমাদের ঘরে ঢুকছে। খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনও কাজ হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গৃহিণীরা এখন কৃষাণী
চাতাল মালিক ও ডাকবাংলা চাউল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন ভান্ডারী বলেন, ‘আমাদের চাতালের পাশে প্রভাবশালীরা পুকুর খনন করায় চাতাল এলাকার পানি বের হচ্ছে না। এখন পানি নিষ্কাষণ না হওয়াই আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কিছু বসত-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।’
তিনি জানান, প্রায় ২০টি চাতাল ক্ষতিগ্রস্থ, উৎপাদন কাজ বন্ধ থাকার ফলে কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। প্রশাসনকে একাধিকবার জানানোর পরও কোনও ফল পাওয়া যায়নি। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিন পরে অটো রাইস মিলের ভেতরেও পানি উঠে যাবে। ফলে আরও কয়েক কোটি টাকা লোকসানের ঝুঁকি বাড়ছে।’
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শাহীন জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যনদের নিয়ে তিনি এলাকাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। দ্রুতই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন।