সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বেলায়েত হোসেন জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রেড এ্যালার্ট বাস্তবায়নে মৌখিকভাবে ফাঁড়ি ও ক্যাম্পগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, সম্প্রতি বনের ভেতর ও বন সংলগ্ন এলাকায় বন্যপ্রাণী নিধন বেড়ে যাওয়ায় এ রেড এ্যালার্ট জারি করা হয়। পাশাপাশি বনরক্ষীদের টহল জোরদার করার নির্দেশনা এবং বনে ছোট ডিঙি নৌকা চলাচলের ওপরও সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিয়াশান্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায় বলেন, ‘শিকারীরা নিশ্চয়ই কানো না কারো ছত্রছায়ায় এ কাজে যুক্ত রয়েছে। যারা আটক হচ্ছেন, তারা সমাজের বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত। সমাজের প্রতিষ্ঠিত লোকদের প্রশ্রয় ছাড়া এরা সক্রিয় থাকতে পারে না।’
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ‘পশ্চিম বন বিভাগে রেড এ্যালার্ট দেয়ার মতো কোনো ঘটনা নেই। সম্প্রতি সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী রক্ষায় এ অপরাধে জড়িতদের তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কার বিধিমালা-২০২০ অনুমোদন হয়েছে। এর ফলে এখন চোরা শিকারীদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষ তথ্য প্রদানে উৎসাহিত হয়েছে।’
নানা প্রতিকূলতায় ঘুরছে না সুন্দরবনের জেলেদের ভাগ্যের চাকা
বিধিমালা অনুযায়ী সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বাঘের চামড়াসহ আটক করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে তথ্য প্রদানকারীকে ৫০ হাজার টাকা ও সুন্দরবনের বাইরে বাঘের চামড়াসহ আটক করার তথ্য প্রদানকারীকে ২৫ হাজার টাকা, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে হরিণের চামড়াসহ আটক করার সহায়তাকারীকে ২০ হাজার টাকা ও সুন্দরবনের বাইরে হরিণের চামড়াসহ আটক করায় সহায়তাকারীকে ১০ হাজার টাকা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। একই সাথে তথ্য প্রদানকারীর নিরাপত্তা ও তথ্য গোপন রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
ড. আবু নাসের, ‘সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী শিকার বাড়েনি। আগে বণ্যপ্রাণীর অংশ বিশেষ উদ্ধার হলেও, আসামি আটক হত না। এখন পুরস্কার ঘোষণার কারণে বন্যপ্রাণীর অংশসহ আসামি আটক হচ্ছে। এ কারণে মনে হচ্ছে বন্যপ্রাণী শিকার বেড়েছে। আসলে নতুন বিধিমালার পর মানুষের সচেতনতা বেড়েছে।’
সুন্দরবনে হরিণ শিকারি চক্র আটক, নৌকা ও ফাঁদ জব্ধ
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি বাগেরহাটের শরণখোলা থেকে একটি বাঘের চামড়াসহ এক পাচারকারীকে আটক করে সুন্দরবন বিভাগ ও র্যাব-৮। এরপর গত ২২ জানুয়ারি আবারও শরণখোলা থেকে ১৯টি হরিণের চামড়াসহ দুই পাচারকারীকে আটক করে ডিবি পুলিশ। ২৫ জানুয়ারি খুলনার দাকোপ উপজেলার পানখালী খেয়াঘাট এলাকা থেকে ১১ কেজি হরিণের মাংসসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ।
এছাড়া গত ৩১ জানুয়ারি মোংলার দিগরাজ এলাকা থেকে ৪৭ কেজি হরিণের মাংসসহ তিন জনকে কোস্টগার্ড এবং ২ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাটের রামপাল থেকে ৪২ কেজি হরিণের মাংসসহ পাচারকারীদের আটক করে ডিবি পুলিশ।