এ বছর দীর্ঘ মেয়াদি বন্যায় কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা অববাহিকার কৃষকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর বন্যায় জেলায় ২৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমির রোপা আমন, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজি খেত ও ১৫৫ হেক্টর বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত। তবে কৃষি বিভাগ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
বৃহস্পতিবার স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিল পাড়া গ্রামের কোরবান আলী বলেন, 'তিন বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছি, দীর্ঘ মেয়াদি বন্যায় সব পচে গেছে। কীভাবে কী করবো বুঝতে পারছি না, এখন তো সময় নাই, বীজতলাও নাই। কীভাবে আবাদ করবো?'
একই ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার মিয়া বলেন, আমার পাঁচ বিঘা জমির আমন খেত এখনো তলিয়ে আছে। তবে দুদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলেও আর আবাদ হবে না।
আরও পড়ুন:বন্যায় কুড়িগ্রামে ভোগান্তি চরমে
এবার যে ক্ষতি হলো তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। পানি নেমে গেলে না হয়, আবার ধান রোপণ করতাম, কিন্তু বীজতলা তো নাই। সবমিলিয়ে খুবই সমস্যায় আছি, আগামীতে কীভাবে চলবো।
পাঁচগাছী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, নদ-নদীর পানি তো কমতেছে কিন্তু এখনো আমার ইউনিয়নে আমন খেত পানিতে তলিয়ে আছে। সব মিলে প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে আমন আবাদ ১ হাজার হেক্টর ও অন্যান্য ফসল ৫০০ হেক্টর হবে।
আরও পড়ুন:মাগুরায় বন্যার পানিতে রাস্তা ডুবে জনদুর্ভোগ চরমে
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, কুড়িগ্রামে এবার বন্যায় রোপা আমন, সবজি ও বীজতলা মিলে প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর বিভিন্ন ফসল ১৬-১৭ দিন পানিতে নিমজ্জিত ছিল। জেলায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে এ তথ্য পাঠিয়েছি। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে।