গোপালগঞ্জে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১১ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩০ জন আহত হয়েছে। এই সময় সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় ছয়টি বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নের পারচন্দ্রদিঘলীয়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ১৭ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে দেখো গেছে, শুকতাইল ইউনিয়নের বিজয়ী চেয়ারম্যান রানা মোল্লা ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মো. আবেদ আলী সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মো. আবেদ আলীর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওই গ্রামের সাবান মোল্লা ও অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিয়েছেন রবিউল মোল্লা। নির্বাচনের পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
বিজয়ী চেয়ারম্যান রানা মোল্লার সমর্থক আহত মুরাদ শেখ বলেন, সোমবার আমি বাড়ি থেকে সরিষা নিয়ে তেল ভাঙ্গাতে চন্দ্রদিঘলিয়া যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে আবেদ আলীর সমর্থক বিরামপাড়ার জাফর মোল্লার ছেলে রাজিবুল আমাকে হুমকি দেয়। এ সময় আমার ছেলে রিয়াদ এসে তাকে চলে যেতে বললে সে আমার ছেলেকে হতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকে ও হাতুড়ি পেটা করে হাত ভেঙে দেয়।
ওই ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সকালে আবেদ আলীর সমর্থকেরা সংঘবদ্ধভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রানা মোল্লার সমর্থদের ওপর হামলা চালায়। এসময় তারা ছয়টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। সংঘর্ষ চলার সময় ১১ জন গুলিবিদ্ধ হন।
এবিষয়ে জানতে পরাজিত চেয়ারম্যান শেখ মো. আবেদ আলীর সমর্থক সাবান মোল্লা বলেন, এটা সামান্য একটা ঘটনা। নিবার্চনের পর থেকে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। রানা মোল্লা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তারা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। দুই পক্ষের লোক জড়ো হয়ে সংঘর্ষ হয়। কে কাকে গুলি করছে তা আমি বুঝতে পারিনি।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকৎসক ড. বিচিত্র কুমার বিশ্বাস বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ১৭ জন রোগী হাসপাতালে এসেছে। এদের মধ্যে ১১ জনের শরীরে গুলি লেগেছে। তাদের শরীর থেকে গুলি বের করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন ঝুঁকি মুক্ত।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল বলেন, সুকতাইল সংঘর্ষে ঘটনা জানার পর আমরা তাৎক্ষণিক ছুটে যাই। এছাড়া হাসপাতালে এসেছি রোগী দেখতে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।