ফরিদপুরের মধুখালী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের মধুপুর এলাকায় মাদক ব্যবসার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে গ্রামবাসী।
শনিবার দুপুরে আড়কান্দি বটতলায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবীদ ও ভুক্তভোগী গ্রামবাসী অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাজাহান খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘মধুপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আব্দুস সামাদ খানের পরিবার দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এর প্রতিবাদ করায় তার ছেলে সোহেল খানকে ইয়াবা দিয়ে আটক করিয়েছে।’
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় মানববন্ধন
সোহেলের স্ত্রী শিখা বেগম বলেন, তার স্বামী ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। এক লোককে দিয়ে ডেকে নিয়ে মধুখালী রেলগেটের সজলের বাড়িতে আটকে ইয়াবাসহ তাকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়া হয়।
২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীর্জা আব্বাস হোসেন জানান, সামাদ খানের বাবা ছিল গ্রামের চৌকিদার। কিন্তু মাদক ব্যবসা করে তিনি এখন গাড়ি ও জমির মালিক হয়ে গেছেন।
তিনি জানান, তার কারণে এলাকার তরুণ সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৭ সালে ৩ হাজার ১ পিস ইয়াবা, বিদেশি মদ ও যৌন উত্তেজক বড়ি, পুলিশের বুট ও মাদক বিক্রির ৭৭ হাজার টাকাসহ সামাদ খান ও তার মা রোকেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই মামলার সাক্ষী মধুপুর গ্রামের হায়দার আলী খান (৫৫) বলেন, তার সামনেই এসব মাদক ও মালামাল উদ্ধার করলেও সামাদ খান তাকে ভয় দেখিয়ে আদালতে মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে জমিদার বাড়ি সংরক্ষণ ও পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে মধুখালী আখচাষি কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী মুন্সি এনায়েত হোসেন বলেন, ‘তার গ্রামে ইয়াবা কেনার জন্য প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ২৫টি মোটর সাইকেল প্রবেশ করে।’
তিনি বলেন, তার দোকান ভাড়া নিয়ে সোহেল টেইলারিংয়ের ব্যবসা করতো। দশ বছর আগে একদিন শুনি তার দোকানে ফেনসিডিল পাওয়া গেছে। সোহেলের মতো অনেক তরুণকে মাদক দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন উপজলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুজ্জামান বাবলু মিয়া, নওপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম খান, স্কুল শিক্ষক মাসুদ খান, মজিবুর রহমান, মাহবুবুর রহমান বাকী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনের পরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: কেরানীগঞ্জে সাবরেজিস্ট্রার অফিস সহকারীর বদলির দাবিতে মানববন্ধন
অভিযুক্ত সামাদ খান বলেন, ‘র্যাবের এক সদস্য অন্যায়ভাবে তার গাড়ি আটকের ঘটনায় তিনি এক র্যাব কর্মকর্তার নামে একটি মামলা করেন। এর প্রতিশোধ নিতেই রাতের আঁধারে আমাকে ও আমার মাকে ধরে নিয়ে একইরাতে একই অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করে। পরে এসব মামলায় তদন্ত শেষে ফাইনাল রিপোর্ট দেয় পুলিশ। তিনি সোহেলখানের বিরুদ্ধে উল্টো মাদক ব্যবসার অভিযোগ করে বলেন, তার বাবাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করলে তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করে।