ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টের তিন কর্মকর্তা কর্মচারী । সোমবার দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে তাদের এই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
তারা হলেন- রিসোর্টের রিসিপশন কর্মকর্তা নাজমুল হাসান অনি, সুপার ভাইজার আবদুল আজিজ পলাশ ও আনসার সদস্য রতন বড়াল।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ মামলায় হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
এর আগে সোমবার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। দুপুর সাড়ে বারোটার সময় তাকে আদালতে হাজির করা হলে ২টা পর্যন্ত চলে সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম। পরে তাকে কাশিমপুর কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন আহমেদ জানান, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা এই ধর্ষণ মামলায় ৪৩ জন সাক্ষী রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়্যাল রিসোর্টের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ পলাশ, পাবলিক রিলেশন অফিসার নাজমুল হাসান অনি ও আনসার সদস্য রতন বড়াল সাক্ষ্য দিয়েছেন। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তাদের জেরা করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
তিনি আরও জানান, আদালত পাঁচজন সাক্ষীকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলেও চারজন উপস্থিত হয়েছেন। তবে আদালতে হাজিরা দেয়া ইসমাইল হোসেন নামে আরেক আনসার সদস্যের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। পরের তারিখে তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হতে পারে। এর আগে গত ২৪ তারিখ একই আদালতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদি ও ভুক্তভোগী নারী জান্নাত আরা ঝর্ণা।
আরও পড়ুন: মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন আরও বলেন, আদালতে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেন। তারা গত ৩ এপ্রিল রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনা জানান। সাক্ষীরা আদালতকে বলেন, ‘ওইদিন রিসোর্টে বিশৃঙ্খলার পর ওই নারীর সঙ্গে তার কী সম্পর্ক জানতে চাইলে তাকে স্ত্রী দাবি করেন মামুনুল। তবে এই বিষয়ে বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। রিসোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্যান্যদের সামনেই মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী নারী বিয়ের প্রলোভনে রিসোর্টে এনে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে সকলের সামনে ওই কথা স্বীকারও করেন মামুনুল হক।’
উল্লেখ্য, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হেফাজত নেতা মামুনুল হক ওই রিসোর্টে নিয়ে ধর্ষণ করেছেন এমন অভিযোগ তুলে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় ধর্ষণ মামলা করেন জান্নাত আরা ঝর্ণা। ওই মামলায় ৩ নভেম্বর মামুনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ২৪ নভেম্বর আদালতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদি ঝর্ণা।