টানা ৭ ঘণ্টার বৃষ্টিতে রংপুর মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে সবখানেই কোথাও কোমর পানি, আবার কোথাও হাঁটু পানি। বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করায় নগরীর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানায়, রবিবার সকাল ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে রবিবার রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৭টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২২২ মিলিমিটার।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে নগরবাসী
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে সবেচেয়ে বেশি পানি প্রবেশ করেছে। বেশির ভাগ রাস্তা ৩-৪ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরীর সেনপাড়া, নিউ সেনপাড়া, আদর্শপাড়া, বাবুখাঁ, কামার পাড়া, জুম্মাপাড়া, গোমস্তপাড়া, কেরানীপাড়া, আলমনগর, হনুমান তলা, মুন্সিপাড়া, মুলাটোল আমতলা, শালবন, মিস্ত্রিপাড়া, কামাল কাছনা, মাহিগঞ্জ, কলাবাড়ি দর্শনা, মর্ডান মোড়, মেডিকেল পাকার মাথা, জলকর, নিউ জুম্মাপাড়া, খটখটিয়াসহ অন্তত শতাধিক পাড়া-মহল্লার অলিগলিসহ প্রধান সড়কে পানি উঠেছে। নিচু এলাকার বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় হাজার হাজার পরিবার বাড়ি ঘর ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেল সাড়ে ১৬ হাজার চিংড়িঘের
পশ্চিম মুলাটোল এলাকার আশরাফুল আলম জানান, গত বছরের রেকর্ড বৃষ্টিপাত অনেক ক্ষতি করেছিল। সেই থেকে বৃষ্টি এলেই এক অজানা আতঙ্ক কাজ করতো, রাতে ঘুম হতো না। এ বছরেও গতকালের টানা বৃষ্টিপাতে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে। ঘরে-বাইরে পানি জমে থাকায় বের হওয়া যাচ্ছে না।
মুন্সিপাড়ার আবু আলম বলেন, টানা বৃষ্টিতে দুর্ভোগের শেষ নেই। বৃষ্টি কমলেও আকাশ এখনো মেঘাচ্ছন্ন অন্ধকার। আবার বৃষ্টি শুরু হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ি ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে কয়েক স্থানে পাহাড় ধস
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বৃষ্টি আরও দু’একদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এভাবে বৃষ্টিপাত হলে নগরীর বেশির ভাগ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রবিবার সকাল ৯টা থেকে সোমবার (৪ অক্টোবর) সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা, এ বছরে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত।
গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ৪৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।