৭০ বছর আগের ভাষা আন্দালনের পথ ধরে স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পেরিয়েছে দেশ। কিন্তু এতো বছরেও ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়নি।
এ অবস্থা উপজেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে। এমন কী কোনো মাদরাসায় শহীদ মিনার নেই। এতে যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করতে পারে না শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, উপজেলায় কিন্ডারগার্টেন বাদে ২৪০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৪৫ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। এতে ভাষা সংগ্রামের ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় ৩৬১ বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার!
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় জানায়, উপজেলার ১৫৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নেকমরদ, গাজীরহাট, বনগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আটটিতে শহীদ মিনার রয়েছে। এছাড়া উপজেলার ৫২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫টিতে ও ১২টি কলেজের মধ্যে তিনটিতে শহীদ মিনার রয়েছে। ১৯ মাদরাসার মধ্যে একটিতেও শহীদ মিনার নেই। এ ছাড়া অর্ধশতাধিক কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। সেগুলোতে একই অবস্থা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাঁশ, কাঠ, ককশিট দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। শহীদদের স্মরণে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি তাদের।
রাণীশংকৈল মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মহাদেব বসাক বলেন, ‘মূলত একুশে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচিগুলো রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সঙ্গে প্রশাসন যৌথভাবে করে দেয়। এ জন্য আমাদের কলেজে তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করা হয় না।’
রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রত্যাশা করি আমাদের উপজেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হোক। তাহলে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নতুন প্রজন্মের মাঝে সৃষ্টি হবে।’
আরও পড়ুন: মাগুরায় শহীদ মিনারে ‘রাজাকারের’ নাম!
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাহিম উদ্দীন জানান, সরকারিভাবে নির্দেশনা রয়েছে প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করার। এই উপজেলায় এখনও যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন হয়নি সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খুব দ্রুত শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের তাগাদা দেয়া হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী শাহরিয়ার জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশনা দেয়া রয়েছে।