গাইবান্ধার সাত উপজেলার ৩৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে না। শহীদ দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে হলে তাদের অনেক দূরে যেতে হয়।
জানা গেছে, জেলায় প্রায় ৭ শতাধিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বর্তমানে শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। জেলা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলায় ৭৫টি কলেজ, ৩৫৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৪০টি কামিল, ফাজিল, আলিম ও দাখিল মাদরাসা রয়েছে। এর মধ্যে ৩০৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে, ৩৬১টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ২৪০টি মাদরাসার মধ্যে একটিতেও শহীদ মিনার নেই। এছাড়া ৭৩৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫১৪টি বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।
আরও পড়ুন: মাগুরায় শহীদ মিনারে ‘রাজাকারের’ নাম!
দেশের ইতিহাসে শহীদ মিনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা হলেও, শহীদ মিনার না থাকায় গাইবান্ধার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের ভাষার মাসে অত্যন্ত সমস্যায় পড়তে হয়।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার নেই। ফুল দেয়ার জন্য আমাদের শহরে যেতে হয়। আমাদের স্কুলে যদি শহীদ মিনার থাকত, তাহলে ভালো হতো।’
অভিভাবক ও মানবাধিকার কর্মী কেএম সালাউদ্দিন বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নিশ্চিত হওয়া দরকার। তা না হলে বর্তমান প্রজম্মের যারা শিক্ষার্থী রয়েছে তারা ভাষা আন্দোলন সর্ম্পকে, শহীদদের গুরুত্ব সর্ম্পকে তারা জানতে পারবে না।
এনএইচ মর্ডান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, কী কারণে ভাষা শহীদেরা ভাষার জন্য আত্মহুতি দিয়েছিলেন, পরবর্তী প্রজম্মকে এ বিষয়গুলো জানানোর জন্যই ভাষার মাসে আমরা তাদের স্মরণ করি। সব শিক্ষার্থীকে এ বিষয়ে জাগ্রত করার জন্য প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি করে শহীদ মিনার নিমার্ণ করা দরকার।
আরওপড়ুন: কয়রায় ৯৪ শতাংশ প্রাথমিক স্কুলে নেই শহীদ মিনার
গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন জানান, মুজিববর্ষে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নিমার্ণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে শহীদ মিনার নিমার্ণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। আশা করি ২০২২ সালে বেশি ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নিমার্ণ করা হবে।