খুলনা মহানগরী জুড়ে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। পাশাপাশি জেলা উপজেলা পর্যায়ের সব ধরনের মার্কেটে রয়েছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
প্রতিটি মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে দেখা গেছে ঈদের আমেজ। সব দোকানেই প্রচুর ক্রেতার সমাগম।
দেশি পোশাকের পাশাপাশি চীন, জাপান, কোরিয়ান প্যান্ট ও শ্যার্ট পিস, পাঞ্জাবি এবং ভারতীয় থ্রি পিসে বাজার সয়লাব।
নগরীর বিভিন্ন বিপণিবিতানগুলোতে বেচা বিক্রিতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। সবজায়গাতেই পুরুষের চেয়ে মহিলাদের উপস্থিতি অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। ভিড়ের কারণে শহরে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ঈদের প্রধান জামাত টাউন মসজিদে সকাল ৮টায়
তবে অভিযোগ রয়েছে অসাধু ব্যাবসায়ীরা পোশাক বিক্রি করছেন ক্রয় মূল্যের থেকে দুই/তিন গুণ বেশি দামে।
ক্রেতা তাসনুবা বেগম ইউএনবিকে বলেন, একদিন আগে যে থ্রি পিসের মূল্য চেয়েছে ১৫০০ টাকা। একদিন পরে একই থ্রি পিসের মূল্য চাচ্ছে ২৫০০ টাকা। তাছাড়া ছোটদের পোশাকের দামও অনেক বেশি নিচ্ছে। এতে করে আমরা যারা নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ তারা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। তাছাড়া বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে দোকানিরা সাধারণ ক্রেতাদের কোন মূল্যায়ন করছে না। সামান্য দামও কম নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন দোকানিরা।
দেখা য়ায় নগরীর বিভিন্ন শপিংমল ও বাজার, মোড়ের সামনে ভ্রাম্যমাণ পোশাক বিক্রেতারা ভ্যানে করে প্যান্ট, টিশার্ট, জামাসহ বিভন্ন পোশাক সাজিয়ে বিক্রি করছেন। পাশাপাশি এ সব পোশাকের মূল্যও নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। অনেক ক্রেতাই সেই সব হকারদেরকে ঘিরে ধরে পোশাক পছন্দ করছে। তবে এই নির্ধারিত পোশাকগুলো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে রয়েছে। সর্বোচ্চ ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে। তবে প্রকার ভেদে প্যান্টের দাম একটু বেশি, সর্বোচ্চ ৪০০ টাকার মতো।
আরও পড়ুন: খুলনায় কর্মজীবী নারীদের ঘরে নেই ঈদ আনন্দ!
ক্রেতা মো: কামাল পারভেজ বলেন, ‘সামান্য আয়ের মানুষ আমরা। তাছাড়া চলমান লকডাউনে আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় পরও বছরে একটা ঈদের সময়ে সন্তানদের পোশাক তো দিতে হবে। মার্কেটের ভিতরে দোকানগুলোতে একই পোশাক দুই/তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই এই হকার পোশাক ব্যাবসায়ীর নিকট থেকে ক্রয় করছি। এই পোশাকের মান ভাল। বিশেষ করে আমরা যারা নিম্ন-আয়ের মানুষ তাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।’
পোশাক বিক্রেতা আরিফ ফ্যাসানের মালিক শৈকত বলেন, এ বছর হঠাৎ করোনা ও চলমান লকডাউনের কারণে আমরা চাহিদা অনুযায়ী পোশাক আমদানি করতে পারিনি। আমার দোকানে মহিলাদের পোশাকের কালেকশন বেশি যেমন জামদানী, কাতান, সিল্ক, হাফ। ফ্লোর টাচ, লং ফ্রক, লং কামিজ, কটকটি ড্রেস বেশি চলছে। সব পোশাকের মূল্য স্বাভাবিক আছে। তবে কিছু কিছু দোকানদাররা বেশি দামে পোশাক বিক্রি করছে। এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।
আরও পড়ুন: বায়তুল মোকাররমে ঈদ জামাত শুরু সকাল ৭টায়
এছাড়া খোলা কাপড়ের দোকানে মেয়েরা পছন্দ মতো কাপড় কিনে দর্জি দোকানে বিভিন্ন মডেলের পোশাক তৈরি করছে। ইতিমধ্যে দর্জি দোকানগুলোতে অর্ডার নেয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় দর্জি ব্যাবসায়ী শাহাদৎ হোসেন বলেন, আমার এখানে অনেকেই জামা তৈরি করতে এসেছেন। তবে অর্ডার নিতে পারছি না। কারণ সঠিক সময়ে ডেলিভারি দিতে পারবো না। অনেককে ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন ডেলিভারি দিতে হবে।
তবে এতো সবের মধ্যেও, কোথাও করোনার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মনোভাব দেখা যায়নি। বিপণিবিতানগুলোতেও তেমন স্বাস্থ্য সচেতনতা পরিলক্ষিত হয়নি।