সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুর্গতরা।
সিলেট নগরীর ১৫ হাজারসহ মোট সাড়ে ৮ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ১০৭টি ইউনিয়ন ও আটটি ওয়ার্ডে এখনও পানি আছে।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি
এখনও ১৯ হাজার ৭৩৮ জন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় দুই হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে চলে গেছেন।
জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুলের দিনমজুর কবির আহমদ বলেন, 'আমরা যখন আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলাম, তখন খাবার ও পানি ছিল কিন্তু এখন বাড়ি ফেরার পর খাবার ও পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। পুরো বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আমার বাড়িতে যে ধান রাখা হয়েছিল তা ভেসে গেছে। এখন আমি কী খাব?’
এছাড়া নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে অনেক নিচু এলাকার সড়ক ও বাড়িঘর থেকে এখনো পুরোপুরি পানি নেমেনি।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, রবিবার বিকেল ৩টায় কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান, পানি ধীরে ধীরে কমছে বলে মনে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে এবং বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রম পুরোদমে চলছে।
মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে এবং তারা বন্যাকবলিত এলাকায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
২৮ জুন থেকে আবারও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া শুক্রবার থেকে কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার দুটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট থেকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে খাবার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের টানা বর্ষণে গত ২৭ মে থেকে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। ১৫ জুন থেকে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে বন্যায় ১০০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট, ভেসে গেছে ৪০০ পুকুরের মাছ