সিলেটে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের ৭ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর জিন্দাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
জানা যায়, রবিবার দুপুরে সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীদের পিকেটিংয়ের সময় আহত হয়েছেন পাঁচজন পুলিশ সদস্য। তাদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াত জোট কেরাণীগঞ্জকে সন্ত্রাসের জনপদ বানিয়েছিল: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন স্থানে পিকেটিংকালে জামায়াত ও বিএনপির ৭ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। নাম পরিচয় এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। আহতদের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
এর আগে রবিবার সকাল থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল বের করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। কয়েকটি এলাকায় তারা ভাঙচুর চালায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও ছুড়ে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। সকাল ৯টার দিকে নগরের জেলরোড এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বিএনপি কর্মীরা। মহাজনপট্টির গলি থেকে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে জেল রোড পয়েন্টে এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ সময় তারা রিকশা চলাচলে বাধা দেয়। তবে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে বিএনপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশের দিকেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে নেতা-কর্মীরা। তবে বেশিক্ষণ রাস্তায় থাকতে পারেনি তারা। মিছিল নিয়ে জেলরোডের দিকে চলে যায়।
সকাল সাড়ে ৮টায় জিন্দাবাজার পয়েন্ট ও কাজি ইলিয়াস এলাকায় সড়কে তাঁতিপাড়ার গলি থেকে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী হঠাৎ বের হয়ে পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। তবে পুলিশের ধাওয়ায় তারা দাঁড়াতে পারেনি রাস্তায়। এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীদের দিকে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় পিকেটারদের ফেলে যাওয়া মোটরসাইকেল পুলিশ জব্দ করে। এদিকে ফাঁকা গুলি করলে মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে আশেপাশে অলিগলিতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।
সকাল ১০টার দিকে নগরের দরগাহ গেইটে একটি রিকশায় আগুন দেয় পিকেটাররা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে গাছ ফেলে অবরোধ করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কোহিনূর আহমদ ও সহ-দপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম। প্রায় একই সময়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার তেতলিতে টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
সকাল ৯টার দিকে মহানগরের লন্ডনি রোডের হাজীপাড়ার মুখ থেকে ৩০ থেকে ৩৫টি মোটরসাইকেলে করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বের হয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ আসার আগেই তারা সেখান থেকে চলে যায়।
নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মামুন হোসেনের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে বিএনপির কর্মীরা।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা মিফতা সিদ্দিকী বলেন, ‘এ ঘটনার কিছুক্ষণ আগে পুলিশ বিএনপির একটি মিছিলে ধাওয়া করে। এর পরপরই খবর আসে বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব আটক হয়েছেন। এই দুই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতা-কর্মীদের উত্তেজনা থেকে হয়তো ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা বিষয়টি দেখব।’
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার বিষয়ে সজাগ থাকুন: শিক্ষামন্ত্রী