শুক্রবার রাতে এ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার পর শনিবার ছাত্রাবাসটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। দুপুর ১২টার মধ্যে ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই এমসি কলেজ ছাত্রাবাস ছাত্রলীগের দখলে। ছাত্রদের পাশপাশি অনেক অছাত্রও এখানে আস্তানা গড়েছেন। ছাত্রাবাসের ভেতরে নিজেদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী। টিলাগড় এলাকার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার প্রশ্রয়ে ছাত্রাবাসের ভেতরে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছেন তারা। মাদক সেবন ও ব্যবসা, জুয়ার আসর বসানোসহ নানা অপকর্ম চলে ছাত্রাবাসের ভেতরে। সেখানে অস্ত্র মজুদ করে রাখারও অভিযোগ রয়েছে।
এসব অপকর্ম অব্যাহত রাখতেই কলেজ বন্ধের সময়েও ছাত্রাবাস ছাড়তে রাজি হয়নি ছাত্রলীগ। কলেজ প্রশাসনও তাদের ছাত্রাবাস ছাড়া করতে পারেনি। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে ঘটে ধর্ষণের ঘটনা।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ বলেন, ‘কলেজের গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের সুবিধার জন্য ছাত্রাবাস খোলা ছিল, যারা কি না টিউশনি ও ছোটখাটো চাকরি করে তাদের পড়াশোনার খরচ যোগাচ্ছে। তবে কলেজের ছাত্রাবাস খোলা থাকলেও ক্যান্টিন বন্ধ ছিল, ছাত্রাবাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা খাওয়া দাওয়া করত বাইরেই।’
ধর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। এছড়া আজ দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ত্যাগ করতে বলা হয় বলেও জানান তিনি।
‘অভিযুক্তরা সবাই কলেজের সাবেক ছাত্র। এ জন্য আমরা কলেজ থেকে তাদের বিরুদ্ধে একাডেমিক কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত ছাত্রদের সনদ বাতিলের সুপারিশ করব,’ বলেন তিনি।
ধর্ষণের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত ছয়জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তারা হলেন- এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও ইংরেজিতে মাস্টার্সে অধ্যয়রত শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, এম সাইফুর রহমান ও অর্জুন এবং বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তারেক।