বাংলাদেশ-ভারতের আইনী জটিলতায় গুরুতর আহত ভারতীয় নাগরিক কার্তিক বিশ্বাস (৫৬) নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না। ফলে মানসিক ভারসাম্যহীন এই মানুষটি গত ১৫-২০দিন ধরে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসুস্থ্ হয়ে ভর্তি ছিলেন। গত ৫ অক্টোবর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন থাকলেও ভারত পাঠাতে নেয়া হচ্ছে না কোন উদ্যোগ। গত বছরের নভেম্বর মাসে তিনি ভুল করে আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে চলে আসেন। তিনি ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরাম থানার নাজিরপুর গ্রামের গনপতি বিশ্বাসের ছেলে।
আরও পড়ুন: ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরল ৬ বাংলাদেশি
গত মঙ্গলবার সকাল ১১টায় উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় পুরুষ ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে শুয়ে আছে এক বয়স্ক। পাশের বেডের রোগীরা জালালেন তার নাম কার্তিক বিশ্বাস। গত ১৫-২০দিন ধরে পায়ে আঘাত নিয়ে ভর্তি আছেন। পায়ে আঘাত ছাড়াও তিনি ডায়াবেটিক সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। হাসপাতালের নার্স ছাড়া তাকে সেবা করার কেউ নেই।
এদিকে ভারতে যোগাযোগ করা হলে কার্তিক বিশ্বাসের স্ত্রী বেবি বিশ্বাস জানান, ‘গত ২৭ নভেম্বর সকালে বাড়ীর বাইরে বের হয়ে নিখোঁজ হয় কার্তিক। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। এরপর আত্মীয়-স্বজন সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে তাকে পাওয়া না গেলে গত ১৪ ডিসেম্বর বালুরঘাট থানায় জিডি করি । ৭/৮ মাস পর খবর পাই তাকে বাংলাদেশের জয়পুরহাটে দেখা গেছে। সেখান থেকে আবার তিনি হিলি আসার পথে গত ১৫-২০দিন আগে রাস্তায় এক্সিডেন্ট করে ডান পায়ে চরম আঘাত পেয়ে হিলি (হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বর্তমানে তার ডান পা ইনফেকশন হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাকে দ্রুত দেশে ফিরাতে না পারলে তা পা কেটে ফেলতে হতে পারে। আমরা দুই দেশের সরকারের কাছে আবেদন করছি আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’
আরও পড়ুন: ভারতে ৩ বছর কারাভোগ শেষে ফিরলো ১০ বাংলাদেশি
কার্তিক বিশ্বাসে বোন অনিতা বিশ্বাস জানান, আমার অসুস্থ্ ভাইকে দেশে ফিরিয়ে আনতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সাংসদ, জেলা প্রশাসক (ডিএম), বিএসএফ কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোন সাড়া পাইনি। মানবিক বিবেচনায় তাকে দ্রুত আনা না হলে হয়ত আমার ভাই সেখানে মারা যেতে পারে। বর্তমানে তিনি খুবই অসুস্থ্।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদ আল হাসান জানান, গত ৫ অক্টোবর উন্নত চিকিৎসার জন্য কার্তিককে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি হাকিমপুর হাসপাতালে প্রায় ২০ দিনের মতো ভর্তি ছিলেন। তিনি ডায়াবেটিক সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
আরও পড়ুন: ভারতে পাচার হওয়া ৭ তরুণী দেশে ফিরলেন