খুলনা মহানগর জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ মামলায় অপর ছয়জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
সোমবার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুন্যালের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন মো. তারিক হোসেন। তিনি পলাতক রয়েছেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- তরিকুল হুদা টপি, আব্দুল গফফার বিশ্বাস, ওসিকুর রহমান, মুশফিকুর রহমান, মফিজুর রহমান, মিল্টন ওরফে আনিসুর রহমান।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, খুলনা থানার অদূরে বেসিক ব্যাংকের সামনে ১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন শেখ আবুল কাশেম ও তার গাড়ি চালক মিকাঈল হোসেন। খুলনা থানায় মামলা দায়ের হলেও পরে তদন্তের দায়িত্ব পড়ে সিআইডি’র ওপর। তারা দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৯৯৬ সালের ৫ মে ১০ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় কাজি আমিনুল হক, সৈয়দ মনিরুল ইসলাম (মৃত), তরিকুল হুদা টপি, আব্দুল গফফার বিশ্বাস, ইকতিয়ার উদ্দিন বাবলু (মৃত), ওসিকুর রহমান, মুশফিকুর রহমান, মফিজুর রহমান, মিল্টন ও তারেককে।
আলোচিত এ হত্যা মামলার বিচার কাজ ১৯৯৭ সালে ৮ জুন শুরু হলেও প্রথম দিনই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিআরপি ৪৯৪ ধারা মতে প্রজ্ঞাপনে অভিযোগপত্র থেকে কাজি আমিনুল হকের নাম বাদ দেয়। বাদীপক্ষ এই প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে প্রথমে মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। পরে কাজি আমিনুল হককে বাদ দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেয় বাদীপক্ষ। পরবর্তীতে এ মামলার অপর আসামি সৈয়দ মনিরুল ইসলাম নিজের অংশ বাদ রেখে বিচার চালানোর আবেদন করলে উচ্চ আদালত মামলার বিচার কাজ স্থগিত করে। ২০০৮ সালে ২৪ এপ্রিল খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পুনরায় বিচার কাজ শুরু হয়। ওই সময় মোট ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য হওয়ার পর একই বছরের ২০ নভেম্বর মামলাটি নির্দিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ায় জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফেরত আসে।
এদিকে, সৈয়দ মনিরুল ইসলামের পর আব্দুল গফফার বিশ্বাসের পক্ষে পরে ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১৪ সালে আবারও উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয় পুরোপুরি। এরমধ্যে আসামি সৈয়দ মনিরুল ইসলাম ও ইকতিয়ার উদ্দিন বাবলুর মৃত্যু হয়।
চলতি বছর ৩ জানুয়ারি ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের চিঠি খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসে। পরে আদালত ২৬ জানুয়ারি সাক্ষীদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। এভাবে এ মামলার চার কার্য দিবস শেষ হওয়ার পর ২৩ মার্চ আসামি ও বাদীপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়।