এ অবস্থায় পরিবার-পরিজন, সহায়-সম্পদ, গবাদিপশুসহ ওই এলাকার লোকজন পাশ্ববর্তী জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধ এবং রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে সেখানে কয়েকটি পরিবারকে বাঁধের ওপর আসতে দেখা যায়।
রিনা বেগম নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘অনেকেই আগে আইছে, আজ আমি আসলাম। ঘরে বুক সমান পানি ওঠছে। থাকার কোনো উপায় নাই। তাই এই বাঁধের ওপরে এসে আশ্রয় নিলাম। আল্লায় জানে কী হবে।’
আব্দুর রাজ্জাক নামে এক রিকশাচালক বলেন, ‘সাতদিন ধইরা বান্দের উপরে আছি। করোনায় এমনিতেই ঘরে খাবার নাই। এর মধ্যে বন্যার হানা। এখন কী খাবো, কী করব, টাকা-পয়সাও নাই। কোনদিকে কোনো সাহায্য পাইলে উপকার হতো।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বন্যা আর উজান থেকে আসা ঢলের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে গত কয়েকদিন ধরে বিপজ্জনকভাবে বেড়েই চলেছে। শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৬ দশমিক ৫ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল।
যদিও এখনও বিপদসীমা (১৭ মিটার) অতিক্রম করেনি বলে জানিয়েছেন গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) মো. মোস্তফা মিয়া।
কুলুরচর-বেপারীপাড়া ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. জাফর মিয়া বলেন, ‘বন্যার পানিতে কুলুরচর-বেপারীপাড়া গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাড়িঘরে পানিতে ডুবে যাওয়ার অনেকেই বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে। তারা সেখানে মানবেতর অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি আমি সদর ইউএনও মহোদয়কে জানিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা দরকার। ’
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন বলেন, ‘স্থানীয় ইউপি মেম্বার বেপারীপাড়া নতুন চরের বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় কিছু পরিবার বাঁধে আশ্রয় নেয়ার কথা জানিয়েছেন।’
এদিকে, ব্রহ্মপুত্রের প্রভাবে শাখা মৃগী নদীতেও পানির স্রোত বেড়েছে। এতে নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ও চরঅষ্টাধর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।