বিশ্ব
যুদ্ধবিরতির পর লেবাননের বাস্তুচ্যুত মানুষ বাড়ি ফিরছে
বুধবার ভোরে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হওয়ায় লেবাননের হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। সূর্য ওঠার আগেই তারা তাদের জিনিসপত্র সংগ্রহ করেন এবং দক্ষিণ লেবাননের তাদের ঘরে ফেরার যাত্রা শুরু করেন।
বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড়ে রাস্তা পরিপূর্ণ। তাদের মুখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বাড়ি ফেরার আনন্দের সঙ্গে ছিল ব্যাপক ক্ষতির দুঃখও। অনেকেই এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস্তুচ্যুত ছিলেন। তাদের ঘর ফিরে পাওয়ার আনন্দ ছিল, কিন্তু একইসঙ্গে ছিল হারানো ফসল, ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িঘর এবং সংঘর্ষের সময় নিহত প্রিয়জনদের শোক।
জিহাদ নাসরাল্লাহ নামে বাসিন্দা সিনহুয়াকে বলেন, ‘বাস্তুচ্যুতরা প্রায় নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। ভোরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ একে অপরকে বিদায় জানাতে গিয়ে আনন্দের অশ্রু ফেলছিলেন। গাড়ির হর্নের শব্দ আনন্দ উদযাপনের শব্দের মতো মনে হচ্ছিল।’
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কফারহামাম গ্রামে, বেশিরভাগ ফিরে এসে দেখেন, ইসরায়েলি বোমায় তাদের ঘর ধ্বংস হয়েছে।
হাসান আব্দুল করিমের মতে, তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাস্তুচ্যুত অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া এবং তাদের গ্রামে ফিরে আসা।
তিনি সিনহুয়াকে বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত করা অন্যায়, অপমানজনক ও অত্যন্ত দুঃখজনক। স্কুলের হলরুমে গাদাগাদি করে পাঁচ থেকে আটটি পরিবারের সঙ্গে থাকার চেয়ে আমরা বরং আমাদের বাড়ির ধ্বংসাবশেষের উপর তাঁবুতে বাস করব। তাই আমরা গাড়ির ছাদে তোষক ও কম্বল নিয়ে ফিরে এসেছি।’
বেকা উপত্যকা ও দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতের জন্য বুলডোজার ও ট্রাক মোতায়েন করেছে লেবাননের সেনাবাহিনী। এদিকে, অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ট্র্যাফিক পরিচালনা করছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরের প্রবেশদ্বারগুলোতে লেবাননের রেড ক্রস এবং ইসলামিক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মেডিকেল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
অব্যাহত বিমান হামলার কারণে ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় বালবেক শহর ও মাচঘারা, সোহমোর ও ইয়োহমোরসহ পশ্চিমাঞ্চলীয় বেকা গ্রামগুলোতে ফিরে আসা লোকজনের। তবে এখনও সবাই ফিরে যেতে পারেননি। ইসরায়েল-লেবাননের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো থেকে আসা লোকজন অপেক্ষা করছেন। কারণ ইসরায়েল তাদের বাহিনী প্রত্যাহার শেষ না করা পর্যন্ত তাদের ফিরে আসার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিল।
সীমান্তবর্তী গ্রাম ওয়াজ্জানি থেকে বাস্তুচ্যুত ফাতিমা আল-আহমদ লেবাননের সেনাবাহিনীর ছাড়পত্রের অপেক্ষায় তার গবাদি পশু নিয়ে খান বাজারে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতিতে খুশি, কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের গ্রাম ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত আমরা ফিরে যেতে পারব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘লেবানন সেনাবাহিনী আমাদের ফেরার তারিখ সম্পর্কে আমাদের জানাবে। আমরা তাদের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করব। আনুমানিক ৩,০০০ ভেড়া নিয়ে আমরা ফেরার অপেক্ষায়।’
যারা ফিরে এসেছেন, তাদের জন্য চ্যালেঞ্জের শেষ নেই। দক্ষিণাঞ্চলীয় হাব্বারিয়েহ গ্রামে ফিরে আসা রিয়াদ ইসা সামনের কঠিন লড়াইয়ের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ, জমি পুনঃরোপণ এবং আমাদের গ্রামে জীবন ফিরিয়ে আনা খুবই কঠিন কাজ। বিশেষত অপ্রতুল সম্পদ এবং চলমান অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে খুবই পরিশ্রম ও সময়সাপেক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘তবে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হলো মানসিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা। যেসব সম্পত্তি ধ্বংস হয়ে গেছে, তা আমরা পুনর্নির্মাণ করতে পারি, কিন্তু প্রিয়জনদের হারানো এবং যুদ্ধ ও বাস্তুচ্যুতির স্মৃতি আমাদের মনে চিরকাল গেঁথে থাকবে।’
৩৯৫ দিন আগে
গ্রিসে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবি, দুই শিশুসহ নিহত ৪
গ্রিসের পূর্বাঞ্চলীয় সামোস দ্বীপের একটি পাথুরে উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকাডুবির ঘটনায় দুই শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন।
সম্ভাব্য নিখোঁজ যাত্রীদের অনুসন্ধানে টহল জাহাজ, লাইফবোট ও স্থল বাহিনীর সমন্বয়ে একটি উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে দেশটির কোস্টগার্ড।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নৌকাটিতে ঠিক কতজন আরোহী ছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
গ্রিসের একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, শীতের মাসগুলোতে অভিবাসীদের আগমন ঝুঁকি বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের কারণে এ বছর অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ বাড়বে বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তা।
গত সোমবার ওই দ্বীপের উপকূলে একটি নৌকাডুবিতে ছয় শিশু ও দুই নারীসহ আট অভিবাসীর মৃত্যু হয়। তিন দিন না পেরোতেই ফের একই ঘটনা ঘটল।
পূর্ব এজিয়ান সাগরে অবস্থিত গ্রিসের সামোস ও অন্যান্য দ্বীপগুলোতে তুরস্ক থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অভিবাসীদের প্রবেশের মূল ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করে থাকে অভিভাসনপ্রত্যাশীরা। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলো চলমান যুদ্ধের কারণে এই রুটে অভিভাসনপ্রত্যাশীদের সক্রিয়তা বেড়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার গ্রিসের বেসরকারি স্কাই টেলিভিশনকে অভিবাসনমন্ত্রী নিকোস পানাগিওটোপোলোস বলেন, আবহাওয়ার অবনতি হওয়ায় আগামী সপ্তাহগুলোতে ওই অঞ্চলে এ ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে।
৩৯৫ দিন আগে
ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার সকাল থেকে ভূমিধসের কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আরও ১০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মেদান শহরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উত্তর সুমাত্রার আঞ্চলিক ট্রাফিক পুলিশের পরিচালক মুজি এদিয়ান্তো বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ওই সড়কের পাশে ভূমিধসের স্থানগুলোর মাঝে এখনও কিছু যানবাহন আটকা পড়ে আছে। তাদের সরিয়ে নিতে অন্তত দুই দিন সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ ১০ দর্শনীয় স্থান: শীতের ছুটিতে সাধ্যের মধ্যে ভ্রমণ
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের পার্বত্য এলাকার চারটি স্থানে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ২০ জনের মৃত্যু হয়।
অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় প্রতি বছরই বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। ১৭ হাজার দ্বীপপুঞ্জের দেশটির লাখ লাখ নাগরিক পার্বত্য অঞ্চলে এবং প্লাবনভূমির কাছাকাছি বাস করে।
৩৯৫ দিন আগে
সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর ওপর বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত ৮৯
সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর ওপর বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও তাদের মিত্র গোষ্ঠীগুলো। এই হামলায় অন্তত ৮৯ জন নিহত হয়েছে এবং বিদ্রোহীরা ওই অঞ্চলের দখল নিয়েছে।
সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, অভিযান শুরুর ১২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ২১টি গ্রাম, শহর ও কৌশলগত স্থানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এইচটিএস ও আল-ফাতাহ আল-মুবিন অপারেশন রুমের উপদলগুলো।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) হওয়া এই সংঘর্ষে ৮৯ জন সামরিক সদস্য নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে এইচটিএস ও এর সমর্থক গোষ্ঠীর ৫২ জন এবং সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ৩৭ জন সদস্য রয়েছে।
এছাড়া এইচটিএস পাঁচ সিরীয় সেনাকে আটক করেছে এবং অস্ত্র গুদাম, সাঁজোয়া যান ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করেছে।
আরও পড়ুন: ভুয়া খবর ছড়ানোর অভিযোগে বিবিসি’র মিডিয়া স্বীকৃতি বাতিল করল সিরিয়া
এই অভিযানের জবাবে রুশ যুদ্ধবিমানগুলো আতারিব শহরের আশপাশের দলগুলোর পেছনের অবস্থানে ভ্যাকুয়াম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে বিমান হামলা চালায়। পাশাপাশি সিরিয়ার সরকারি বাহিনী আতারিব, দারাত ইজ্জা ও আশপাশের গ্রামগুলোতে শত শত আর্টিলারি শেল ও রকেট দিয়ে গোলাবর্ষণ করে।
পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, একদিন আগে এইচটিএসের সামরিক উপস্থিতির কারণে পশ্চিম আলেপ্পোর গ্রামাঞ্চলের আতারিব ও আশপাশের গ্রামগুলো থেকে বেসামরিক লোকজন সরিয়ে নেওয়া হয়।
এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে সাবেক নুসরা ফ্রন্ট, সিরিয়া, রাশিয়া ও অন্যান্য কয়েকটি দেশ।
৩৯৫ দিন আগে
উগান্ডায় ভূমিধসে ১৩ জন নিহত
উগান্ডার পূর্বাঞ্চলের ভূমিধসে ছয়টি গ্রামের অন্তত ৪০টি বাড়ি চাপা পড়েছে। এ ঘটনার পর এখন পর্যন্ত ১৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উগান্ডা রেড ক্রস সোসাইটি জানিয়েছে, উদ্ধার তৎপরতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার রাতে ভারী বৃষ্টিপাতের পর পার্বত্য জেলা বুলামবুলিতে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। বসতবাড়ি ও কৃষিজমি মিলিয়ে প্রায় ৫০ একর জমি ধসে পড়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওই এলাকার একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য একটি এক্সক্যাভেটর আনা হবে, কিন্তু রাস্তাগুলো কাদায় ঢেকে যাওয়ায় এবং এখনও বৃষ্টি পড়তে থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
বুধবার দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দুর্যোগ সতর্কতা জারি করে বলা হয়, দেশজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্রধান সড়কগুলো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
৩৯৫ দিন আগে
পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার পারাচিনার এলাকায় শিয়া মুসলিমদের বহনকারী যাত্রীবাহী গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালানো হলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
এই হামলার ফলে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। ওই হামলার জবাবে পরবর্তী সময়ে একাধিক পাল্টা হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় সোমবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৮ জনে, বৃহস্পতিবার তা ১০০ ছাড়িয়েছে।
গাড়িগুলোতে হামলার পর প্রাদেশিক সরকারের একটি প্রতিনিধি দল জেলা পরিদর্শন করে এবং উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমন করে পরিস্থিতি শান্তও করেছিল। কিন্তু সালিশি আলোচনার সময়ও বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি জায়াগায় সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল, যা পরবর্তীতে ফের বড় আকার ধারণ করে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে শিয়াদের গাড়িতে হামলায় নিহত বেড়ে ৪২
জেলার ডেপুটি কমিশনার জাভেদুল্লাহ মেহসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি প্রতিনিধি দল সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হওয়ার পর আশপাশের জেলাগুলোর উপজাতি প্রবীণরা বৃহস্পতিবার ‘জিরগা’ বা উপজাতীয় আদালত বসাতে কুররাম যাওয়ার কথা রয়েছে।
প্রবীণরা শত্রুতা নিরসনে নতুন করে উভয় পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
৩৯৬ দিন আগে
মিয়ানমারের সামরিক প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আহ্বান আইসিসির প্রসিকিউটরের
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সামরিক শাসনের প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম এ এ খান এই আহ্বান জানান।
মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিকে ২০২১ সালে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা গ্রহণকারী জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গণধর্ষণ, হত্যা ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগসহ জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে আদালতের শীর্ষ প্রসিকিউটর করিম খান এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি শিগগিরই মিয়ানমারের নেতাদের বিরুদ্ধে আরও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ করবেন।
বিট্রিশ এই ব্যরিস্টার বলেন, 'এর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সব অংশীদারদের সঙ্গে মিলে দেখাবো যে রোহিঙ্গাদের ভুলে যাওয়া হয়নি। বিশ্বের অন্য সব মানুষের মতো তাদেরও আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’
বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের দমনে অভিযান শুরু করে।
মিয়ানমার প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান মিন অং হ্লাইং তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী এবং জাতীয় পুলিশকে রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ‘রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনায় প্রত্যাশিত অগ্রগতি নেই’
খান বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। প্রধানত মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মিয়ানমার থেকে আসা। যারা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে ২০১৭ সালেই পালিয়ে এসেছেন প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার। তাদের অধিকাংশকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বাঙালির ট্যাগ দিয়ে তাদেরকে দেশের ১৩৫তম বৈধ জাতিগত সংখ্যালঘু হিসেবে হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে আসছে। দেশটির দাবি- তাদের (রোহিঙ্গা) জন্মভূমি বাংলাদেশে এবং তারা অবৈধভাবে মিয়ানমারে বসতি স্থাপন করেছে।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ইউক্রেন ও গাজার সংঘাতের বিষয়টি সামনে আসায় রোহিঙ্গাদের ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে মনোযোগ কমে গেছে।
যখন সাত বছর আগে সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নতুন করে নৃশংসতার ঘটনা ঘটছে। ঠিক তখনিই আইসিসির প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত এলো।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র আন্তর্জাতিক বিচার উপদেষ্টা মারিয়া এলেনা ভিগনোলি বলেন, 'নির্যাতন ও দায়মুক্তির চক্র ভাঙার ক্ষেত্রে আইসিসির সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
আরও পড়ুন: আইসিসিতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচার চাইবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
৩৯৬ দিন আগে
হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সমর্থন নেতানিয়াহুর
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতি তার সমর্থন ঘোষণা করেছেন। এদিকে লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন।
চুক্তি কার্যকর হওয়ার আগে সম্ভাব্য উত্তেজনা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়ে সামরিক বাহিনী অনেক বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার নোটিশ জারি করেছে। সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি সেনারা প্রস্তাবিত চুক্তির মূল জায়গা লিতানি নদীর কাছে পর্যন্ত পৌঁছেছিল।
নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি তার মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। পরদিন ভোট হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলি অপ্রকাশিত রয়েছে। এই চুক্তি গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান অভিযানকে প্রভাবিত করবে না।
আরও পড়ুন: নেতানিয়াহু ও হামাসের নিহত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
চুক্তিতে দুই মাসের জন্য যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে হিজবুল্লাহকে দক্ষিণ লেবানন থেকে তার বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে এবং ইসরায়েলি সেনারা তাদের সীমান্তে পিছু হটবে। লেবাননের সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে কাজ করবে।
বৈরুতে আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এতে বেসামরিক লোকজন নিহত হয় এবং ব্যাপক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। হিজবুল্লাহ তাদের রকেট হামলা অব্যাহত রাখলে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সাইরেন বাজানো হয়।
হিজবুল্লাহ চুক্তি লঙ্ঘন করলে তাদের জবাব দেওয়ার অধিকারের ওপর জোর দিয়ে বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জের ওপর জোর দিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা সব পক্ষকে চুক্তি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে লেবাননে বিধ্বস্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু
৩৯৭ দিন আগে
এশিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন প্রসঙ্গে রাশিয়ার পাল্টা হুমকি
এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র দেখা গেলে, মাঝারি পাল্লার ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে পারে রাশিয়াও।
সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাশিয়া এশিয়ায় মধ্যমপাল্লার ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের কথা বিবেচনা করছে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পশ্চিমা দেশগুলো ঠেকাতে পারবে না: পুতিন
রিয়াকভ বলেন, ‘বিশ্বের যেকোনো অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সিস্টেমের উপস্থিতি আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে। এর মধ্যে সামরিক ও সামরিক-প্রযুক্তিগত প্রতিক্রিয়া সংগঠিত করার বিষয়ও থাকবে।’
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব ইউরোপীয় ঘাঁটিগুলোতে পারমাণবিক অস্ত্রও মোতায়েন করা হয়েছে, সেগুলোও রাশিয়ার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্য হতে পারে।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ সোমবার ঘোষণা করেছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী পশ্চিম রাশিয়ার তিনটি অঞ্চলে ‘গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়’ রাতভর ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়েছে।
জেনারেল স্টাফ এক ফেসবুক বিবৃতিতে জানান, কালুগা অঞ্চলের একটি তেলের ডিপোতে আক্রমণ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ব্রায়ানস্ক ও কুরস্ক অঞ্চলের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণের ক্ষতির পরিমাণ এখনও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ৬টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার দাবি মস্কোর
৩৯৮ দিন আগে
সুমাত্রা দ্বীপে ভূমিধস-বন্যায় নিহত ১৬
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের পার্বত্য গ্রামগুলোতে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় চাপা পড়ে এবং বন্যায় ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার কর্তৃপক্ষ জানায় এখনও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
শুক্রবার ও শনিবারের ভারী বৃষ্টির পর মাটির স্তূপ, পাথর ও গাছপালা পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ে এবং নদীগুলোর পানি বাঁধ ভেঙে উত্তরের সুমাত্রা প্রদেশের চারটি পার্বত্য জেলা প্লাবিত হয়। এতে বাড়িঘর ভেসে গেছে এবং কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান জাস্প্রি এম. নাদেক জানান, পুলিশ, সেনা ও উদ্ধারকর্মীরা সেমাংগাত গুনং, কোরো জেলার একটি রিসোর্ট এলাকায় ধ্বংসাবশেষে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। লাশ ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে এক্সকাভেটর ও কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছেন তারা।
তিনি বলেন, রবিবার রাতে ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি বাড়ি এবং একটি কটেজ থেকে উদ্ধারকর্মীরা ছয়টি লাশ উদ্ধার করেছেন। আহত নয়জন লোক কোনোভাবে সরে যেতে সক্ষম হয়েছেন। সোমবারও উদ্ধারকর্মীরা দুই শিশুসহ চারজন নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে কাজ করছেন।
স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান পুপুত মাশুরি জানান, রবিবার উদ্ধারকর্মীরা একটি নদী থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১০টি বাড়ি ভেসে গেছে এবং দক্ষিণ তাপানুলি জেলার গ্রামগুলোর প্রায় ১৫০টি বাড়ি ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যায় কয়েক ডজন লোক আহত হয়েছে। এছাড়া ১৩০ হেক্টরের (৩২১ একর) বেশি কৃষিজমি এবং বাগান ধ্বংস করেছে।
রবিবার আকস্মিক বন্যায় দেলি সেরদাং জেলায় চারজন মারা গেছে এবং সোমবার উদ্ধারকর্মীরা ভেসে যাওয়া দু'জনের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
পাদাং লওয়াস জেলার পাহাড়ি গ্রামে হারাং জুলুতে ভূমিধসে বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান মুস্তারি এ সব তথ্য জানান।
শনিবার রাতের দিকে উদ্ধারকর্মীরা একটি গ্রাম থেকে একই পরিবারের চার সদস্যের লাশ উদ্ধার করেন। এর মধ্যে দুটি শিশু ছিল। এছাড়া তিনজন আহত মানুষকে উদ্ধার করেন।
প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধস হয়। এই দ্বীপপুঞ্জে হাজার হাজার মানুষ পাহাড়ি এলাকায় অথবা উর্বর বন্যার তীরবর্তী অঞ্চলে বাস করতে বাধ্য হয়।
৩৯৮ দিন আগে