শুরুর জড়তা কাটিয়ে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে গেল স্পেন, কিন্তু সতর্ক ফুটবলে রক্ষণে দেওয়াল তুলে তার প্রায় সবকটিই রুখে দিল সার্বিয়া। ফলে বড় ধাক্কা খেয়ে নেশন্স লিগ অভিযান শুরু করলে সম্প্রতি ইউরো জিতে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা।
বৃহস্পতিবার রাতে নেশন্স লিগের শুরু ম্যাচে গত মৌসুমে প্রোমোশন পেয়ে মূল পর্বে আসা সার্বিয়ার বিপক্ষে জয়বঞ্চিত হয়েছে টুর্নামেন্টে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দেশটির রাজধানী বেলগ্রেডে অনুষ্ঠিত লিগ ‘এ’ এর গ্রুপ-৪ এর ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে।
ম্যাচে ৭৪ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে মোট ২১ শট নেয় স্পেন, যার পাঁচটি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। অন্যদিকে সার্বিয়ার আটটি প্রচেষ্টার মাত্র একটি ছিল লক্ষ্যে।
এদিন কিছুটা ধীরগতিতে ম্যাচ শুরু করে স্পেন। বল দখলে রেখে খুবই স্লো ফুটবল খেলতে শুরু করে তারা। অন্যদিকে, সজাগ থেকে স্পেনের আক্রমণে ওঠার মুহূর্তের অপেক্ষা করতে থাকে সার্বিয়া। প্রথম দিকে আক্রমণে উঠলেও সময়ের পরিক্রমায় স্পেন যখন খোলস ছেড়ে বের হতে শুরু করে, তখন দুই ধাপে ৯ জন খেলোয়াড়ের রক্ষণ দুর্গ তৈরি করে তারা। ম্যাচজুড়ে যে কোনোভাবে গোল ঠেকাতে মরিয়া ছিল সার্বিয়া।
আরও পড়ুন: রেকর্ড চতুর্থবার শিরোপা জিতে নবযুগের সূচনা করল স্পেন
অষ্টম মিনিটে ম্যাচের প্রথম সুযোগ পায় সার্বিয়া। নিজেদের বক্স থেকে বল ধরে পাল্টা আক্রমণে উঠে গোলের ভালো সম্ভাবনা তৈরি করে স্বাগতিকরা। তবে শেষ পর্যন্ত স্প্যানিশ রক্ষণে তা প্রতিহত হয়ে যায়।
এরপর দশম ও দ্বাদশ মিনিটেও দুটি আক্রমণে ওঠে সার্বিয়া, তবে ভালো ফিনিশিংয়ের অভাবে সেগুলো আলোর মুখ দেখেনি। এরপর নিজেদের স্বভাবজাত ফুটবলে ফেরে স্পেন।
অষ্টাদশ মিনিটে মুহূর্মুহু আক্রমণে সার্বিয়ার রক্ষণ কাঁপিয়ে দেয় চ্যাম্পিয়নরা। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের রুখে দেয় সার্বিয়ার জমাট রক্ষণ।
দুই মিনিট পর আরও দুটি আক্রমণ শানায় স্পেন। তবে দানি কারভাহালের শট পোস্টের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর ২৪তম মিনিটে মার্তিন জুবিমেন্দির দুর্বল শট লুফে নেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক।
২৮তম মিনিটে পাল্টাপাল্টি দুটি পাল্টা আক্রমণ দেখে সমর্থকরা। দুই দলেরই রক্ষণভাগ এসময় নড়বড়ে হয়ে গেলেও গোল খাওয়া থেকে শেষমেষ বেঁচে যায় দুপক্ষই।
৩২তম মিনিটে গোল পেয়েই যাচ্ছিল স্পেন, তবে ফরোয়ার্ড আয়োসে পেরেসের বুলেট শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর প্রায় ফাঁকা গোলপোস্ট পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন সার্বিয়ার এসি মিলান স্ট্রাইকার লুকা ইয়োভিচ।
পাল্টা আক্রমণে উঠে দ্রুতগতিতে বল নিয়ে স্পেনের বক্সের সামনে গিয়ে ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে চকিতে বক্সে ঢোকা ইয়োভিচকে পাস বাড়ান আন্দ্রিয়া জিভকোভিচ। এসময় স্পেনের গোলরক্ষক দাভিদ রায়াও খানিকটা সামনে চলে এসেছিলেন। কিন্তু ডান পাশ থেকে তাড়াহুড়া করতে গিয়ে দূরের পোস্টের বাইরে দিয়ে বল মারেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড ইয়োভিচ। ফলে নিশ্চিত গোলের সুযোগবঞ্চিত হয় সার্বিয়া।
পরের মিনিটে দুই পাশে দুটি জোরালো শটে গোল পাওয়ার চেষ্টা করে দুই দল। তবে কোনো শটই গোল নিয়ে আসতে পারেনি।
বাকি সময়টুকু সার্বিয়াকে চেপে ধরে গোল তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে স্পেন, কিন্তু সার্বিয়ার রক্ষণভাগ সতর্কতার সঙ্গে তাদের রুখে দিলে জাল অক্ষত রেখেই বিরতিতে যায় দুই দল।