সোমবার ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিনের সাথে সংস্থাটির সদর দপ্তরে বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম ওআইসির আফ্রিকান সদস্য দেশগুলোতে যৌথ কৃষি প্রকল্পে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
এই সকল কৃষি প্রকল্পে বাংলাদেশ তার দক্ষ মানবসম্পদ ও প্রযুক্তি জ্ঞান সরবরাহ করতে পারে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার দেশ সুদান, উগান্ডাসহ অন্যান্য দেশ তাদের অনাবাদি ঊর্বর জমি এই সকল প্রকল্পে ব্যবহার করতে পারে যেখানে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং ওআইসির অন্যান্য সমৃদ্ধশালী দেশগুলো অর্থ বিনিয়োগ করতে পারে।’
প্রস্তাবিত কৃষি প্রকল্প থেকে ওআইসির সদস্য দেশগুলো পারস্পরিকভাবে উপকৃত হতে পারে বলে প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাইডেন প্রশাসনকে নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান ঢাকার
রোহিঙ্গা সঙ্কট: আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ওআইসি
ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তিনি ওআইসির আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া খুঁজে দেখবেন।
মহাসচিব স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের সকল জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশের যে অভাবনীয় উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে অর্জন তার ভূয়সী প্রশংসা করেন মহাসচিব।
বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়াকে তিনি বর্তমান সরকারের সফলতা হিসেবে উল্লেখ করেন।
মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নতি ওআইসির সদস্যভুক্ত অনেক দেশের জন্য উদাহরণ হতে পারে।
বৈঠকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের বিষয় উল্লেখ করে এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য ওআইসি কীভাবে আরও জোরদার ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের জন্য গত মাসে বাংলাদেশে ওআইসির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠানোর জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক এবং অন্যান্য সমর্থন অব্যাহত রাখার জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় ইইউ
ওআইসির মহাসচিব বাংলাদেশে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এ সংকট নিরসনে ওআইসির পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ওআইসিকে মুসলিম বিশ্বের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি শক্তিশালী সংস্থা হিসেবে দেখতে চায় বলে উল্লেখ করেন।
তিনি ওআইসির সদস্যভুক্ত স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
এর আগে ওআইসির মহাসচিব বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সফরসঙ্গীদের তার কার্যালয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
বৈঠকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এফ এম বোরহান উদ্দিন, জেদ্দার দায়িত্বপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন।