এ থেকে ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা ধান আবাদে আগ্রহী হওয়ায় আবাদের এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হাওরে পানি আটকে মাছ শিকার, সুনামগঞ্জে বোরো আবাদে শঙ্কা
গেল আমন মৌসুমে ধানের ফলন ও বাজার দর দুটোই ভালো পেয়েছে চাষিরা। বর্তমানেও বাজারে ১২০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। তাই ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছে কৃষকরা। নতুন উদ্যোমে, নতুন স্বপ্ন নিয়ে নেমে পড়বে বোরো চাষে। চলছে প্রস্তুতি, বীজতলা তৈরির কাজ শেষ। জানুয়ারি মাস থেকে আবাদ কর্যক্রম শুরু হয়ে যাবে।
সদর উপজেলার আতাহার এলাকার কৃষক আকবর আলী জানান, ধানের দাম ভালো পেয়েছেন এবং বর্তমানেও বাজার দর ভালো আছে। তিনি তার ৮ বিঘা জমিতে রোরো আবাদ করবেন। ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই বীজতলা তৈরি করেছেন। ১০ কাঠা জমিতে বীজতলা করেছেন। এবার অন্য বছরের তুলনায় এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বীজতলা ভালো আছে। নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে বাকি বোরো চারা বিক্রি করার কথা জানালেন তিনি।
আরও পড়ুন: যশোরে বোরো আবাদে পাতাব্লাস্টের আক্রমণ, দিশেহারা কৃষক
তিনি জানান, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের পর থেকে বোরো আবাদ শুরু হয়ে যাবে।
একই এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ধানের দর ভালো থাকায় এবার কৃষকরা বেশি জমিতে বোরো আবাদ করবে। তিনিও এবার গতবারের থেকে বেশি জমিতে ধান আবাদ করবেন।
আরও পড়ুন: বিল কচুয়ায় জলাবদ্ধতায় বোরো আবাদ অনিশ্চিত
নাচোল উপজেলার নোমপুর এলাকার কৃষক সেরাজুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বাজার দর ১২০০ টাকার কিছু বেশি। ধানের দর এর আগে এতো ভালো ছিল না বলে অনেকে ধান আবাদ ছেড়ে দিয়েছিলেন। দাম বেশি হওয়ায় যার সেচের ব্যবস্থা আছে তিনি বেশি জমিতে বোরো আবাদ করবেন। ‘আমি ৫ বিঘা আমন আবাদ করেছিলাম আরও দুই বিঘা বেশি জমিতে বোরো আবাদ করব।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা অফিস সূত্র জানায়, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে উপসি ৪৪ হাজার ৪০ হেক্টর ও হাইব্রিড ৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর। আর মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৯ মেট্রিক টন চাল।
সূত্র জানায়, আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৪৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির মধ্যে সদর উপজেলায় ১১ হাজার ৮৪০ হেক্টর, শিবগঞ্জ উপজেলায় ৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর, নাচোল উপজেলায় ৬ হাজার ৯৫০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ১৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর ও ভোলাহাট উপজেলায় ৬ হাজার ১০ হেক্টর।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৬৮০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় সার, বীজের কোনো সমস্যা নেই। ইতোমধ্যেই ২ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বীজতলা ভালো আছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলায় কৃষকরা বোরো আবাদে নেমে পড়বে। আবাদ কার্যক্রম চলবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত।
ধানের দর ভালো থাকায় কৃষকরা বোরো আবাদে অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে উঠেছেন, আর এ কারণে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।