তিনি বলেন, ‘আমরা তিন কোটি (ডোজ) টিকা সংগ্রহ করছি। ভারত সরকার ২০ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে দিয়েছে। অন্যান্য দেশ সরবরাহ করতে রাজি রয়েছে। সেগুলো বিবেচনা করব যাতে আমরা গ্রামীণ পর্যায়ে টিকা নিশ্চিত করতে পারি। আমরা সে জন্য পদক্ষেপ নেব।’
আরও পড়ুন: টিকা নিতে গ্রামের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করুন: প্রধানমন্ত্রী
নারায়ণগঞ্জের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চের (কেআইআইএমএস সিএআরই) ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
শিল্পপতি এবং সমাজসেবক শহীদ রণদা প্রসাদ সাহা ১৯৪৭ সালে মা কুমুদিনীর স্মরণে এ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে তিন কোটি টিকা সংগ্রহ এবং এর জন্য অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করেছে।
তিনি বলেন, ‘গবেষণা চলাকালীন যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন দেয়নি তখনই আমরা অগ্রিম অর্থ প্রদান করেছি যাতে তাড়াতাড়ি টিকা পাই।’
আরও পড়ুন: অনেকের চেয়ে ভালোভাবে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করেছি: প্রধানমন্ত্রী
টিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা করোনা মোকাবিলায় টিকা নিয়ে এসেছি। প্রথম দিকে এটা নিয়ে নানা ভীতি ও গুজব ছড়ানো হয়েছিল। এই কুমুদিনী হাসপাতালের একজন নার্স সবার আগে টিকা নিয়ে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তারপর এখন সবাই নিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘এখন কোনো সমস্যা নেই, সকলেই ব্যাপক আগ্রহ এবং উৎসাহ নিয়ে কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিতে আসছেন।’
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস যখন এসেছিল তা মোকাবিলায় সরকার যা যা করা প্রয়োজন তা করেছে।
আরও পড়ুন: টিকাদান ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে দেশে এখন মহামারি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘টিকা নেয়ার পর সকলকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে। তাহলে আমরা আশা করি, দেশ থেকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব পুরোপুরি চলে যাবে।’
করোনাভাইরাস যখন এসেছিল তা মোকাবিলার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সরকার দুই হাজার ডাক্তার, ছয় হাজার নার্স এবং টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছে বলে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আরও (ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ান) নিয়োগের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি যাতে দেশের মানুষ চিকিৎসা সুবিধা নিতে পারে।’
এ সময় মেডিকেল গবেষণা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: কৃষিপণ্যের বাজার সম্প্রসারণে আরও গবেষণার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ‘রিসার্চটা যাতে হয়, আমাদের দেশে রিসার্চের সুযোগটা খুবই কম। বিশেষ করে মেডিকেল সায়েন্সের রিসার্চ খুব বেশি একটা হচ্ছে না। যেটা হওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন। আসলে যাদের রিসার্চ করার কথা সকলেই ডাক্তার হয়ে রোগী দেখতে এত ব্যস্ত, বসে রিসার্চ- খুবই হাতে গোনা কয়জনকে আমি দেখি, তাদের পাবলিকেশন এবং রিসার্চ।’
ক্যানসার সম্পর্কিত গবেষণা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে এই রোগ নিয়ে গবেষণাও খুব কম। প্রকৃত ডায়াগনসিস করা বা সেভাবে আমাদের পরিবেশ, আবহাওয়া, জলবায়ুর সঙ্গে এই ক্যানসার কীভাবে বিস্তার লাভ করে তার ওপর রিসার্চ করা বা এটার চিকিৎসা করবার জন্য যে রিসার্চ দরকার সেটা খুব কম আমাদের দেশে হয়। রিসার্চটা আমাদের জন্য একান্তভাবে অপরিহার্য।’
তিনি কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ এবং রণদা প্রসাদ সাহা পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা খাতের উন্নয়নে যুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বেসরকারি খাত দেশের স্বাস্থ্য খাতকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন: প্রকল্পের নকশায় ত্রুটির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, সরকার ১৯৯৬-এর মেয়াদকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে এবং এখন চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য গবেষণা কাজের পথ সুগম করার জন্য দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, রণদা প্রসাদ সাহার পুত্রবধূ শ্রীমতী সাহা, কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গল (বিডি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ শাহা প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।