বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ভারতের আদানি গ্রুপের ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আগামী মার্চে জাতীয় গ্রিডে আসবে।
মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ড বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনের পর প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন বলে পাওয়ার ডিভিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় আদানি গ্রুপের ঝাড়খণ্ড পাওয়ার প্লান্টের বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট ২২ টাকা হবে। এই বছরের মার্চ থেকে আমদানি শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরিদর্শনের সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান ও বিপিডিবির চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান।
সফরকালে নসরুল সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ চলতি বছরের মার্চ থেকে বিদ্যুৎ পাবে যার জন্য একটি ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হয়েছে।
পাওয়ার ডিভিশনের বিবৃতিতে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে,‘আদানির ঝাড়খণ্ড প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ আমদানি মার্চ থেকে সম্ভব হবে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা প্ল্যান্ট থেকে প্রায় ৭৫০ মেগাওয়াট পাব। আগামী গ্রীষ্মে আমাদের চাহিদা মেটাতে আমাদের আরও বিদ্যুতের প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু
আদানির ঝাড়খণ্ড কয়লা-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটির প্লান্ট থেকে ৮০০ মেগাওয়াট করে মোট এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে।
নসরুল বলেন, ‘আমরা শক্তির বিকল্প উৎস খুঁজছি। আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
আদানি গ্রুপ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ট। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করার জন্য ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর সই হওয়া একটি চুক্তির অধীনে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে ১৬০০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ায় দুটি সাবস্টেশন এবং বিদ্যুৎ আমদানির জন্য একটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করেছে।
এদিকে, বিপিডিবি-এর কর্মকর্তারা ঝাড়খন্ড প্ল্যান্ট থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের শুল্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ এর দাম বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত পায়রা পাওয়ার প্লান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় দ্বিগুণ হবে।
তারা জানায়, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় বেসরকারি ভারতীয় কোম্পানি আদানি ১৬০০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করলে, সরকারের সঙ্গে সই হওয়া 'ত্রুটিপূর্ণ' চুক্তির কারণে বাংলাদেশ প্রতি মাসে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
বিপিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার বিদ্যমান দাম বিবেচনা করে ৭৫ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে আদানির প্ল্যান্ট থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট আমদানি করতে, কয়লা পরিবহনের খরচসহ আমাদের প্রতি মাসে ২১০০ কোটি টাকা দিতে হবে। অনুরূপ অন্যান্য লেনদেনের কিছু নিয়ম ও কানুন যদি এখানে মানা হতো, তবে খরচ প্রতি মাসে ১৪০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা যেত।’
তিনি আরও বলেন, ‘চুক্তির ত্রুটির জন্য দেশকে প্রতি মাসে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে এবং বছরে আট হাজার ৪০০ কোটি টাকা পর্যন্ত লোকসান হবে।’
আরও পড়ুন: আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালু
সব তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হবে: নসরুল হামিদ