টিআইবি বিএনপির অঙ্গসংগঠন কি না- সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যকে একদিকে বিব্রতকর ও অন্যদিকে সমালোচক মাত্রই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এমন মানসিকতার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, তফসিল ঘোষণা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী রাজনৈতিক ও নির্বাচনী পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় আসন্ন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না- টিআইবির এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রাখেন ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে কী বোঝায়?’ টিআইবিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এমন প্রশ্নের উত্তরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনকালীন সরকার, প্রশাসন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত ভূমিকার ওপর নির্ভর করে সব নির্বাচনপ্রত্যাশী রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিত করেই কেবল অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা সম্ভব- বিজ্ঞ মন্ত্রীর তা বোঝার মতো বিচক্ষণতা রয়েছে বলেই টিআইবি মনে করে।’
আরও পড়ুন: উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়ায় নির্বাচনকালীন সরকারের অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন টিআইবি’র
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়ার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করায় বিএনপির সঙ্গে টিআইবিকে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া এ বক্তব্য অনভিপ্রেত উল্লেখ করে টিআইবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘টিআইবি একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এবং কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করে না। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন মন্ত্রী ও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তির এমন বক্তব্য পুরোপুরি অমূলক ও হতাশাজনক।’
তবে টিআইবি এতে মোটেই অবাক বা বিচলিত নয় বলে মন্তব্য করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, ‘দুর্নীতিমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও সুশাসিত বাংলাদেশ গড়ে তোলার উপযুক্ত রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণে কর্মরত টিআইবির ওপর এ ধরনের অপবাদ দেওয়ার চর্চা নতুন কিছু নয়। কোনো গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন বা পরামর্শ অপছন্দ হলেই আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই টিআইবির প্রতি বিষোদগারে লিপ্ত হয়। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় সরকারের সময় টিআইবিকে বন্ধ করে দেওয়া, সারা দেশের ৬৪ জেলায় মামলা করার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। এমনকি, চলতি বছরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপির পক্ষ থেকে টিআইবি ও সংস্থাটির কর্মকর্তাদের নিয়ে বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার চালানো হয়।’
ড. জামান আরও বলেন, ‘টিআইবির কোনো মন্তব্য কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যাওয়ার সুযোগ নেই। টিআইবির অবস্থান গণতন্ত্র ও সুশাসনের পক্ষে, অগণতান্ত্রিক ও সুশাসনকে বাধাগ্রস্ত করে এমন শক্তির বিপক্ষে। তবে একইসঙ্গে লক্ষ্যণীয়, টিআইবিকে নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও পরিস্থিতিভেদে এমন বিষোদগার টিআইবির নিরপেক্ষতাকেই প্রমাণ করে।’
আরও পড়ুন: নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে অপসারণে উদ্বেগ প্রকাশ টিআইবির