তিনি বলেন, ‘আমি যখন মালয়েশিয়ায় আমার ভাইয়ের সাথে দেখা করি তখন কোনো মামলায় অভিযুক্ত ছিল না এবং এর আগে তাকে ষড়যন্ত্রের মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে। তিনি মার্চ মাসে খালাস পেয়েছেন এবং আমি এপ্রিলে তার সাথে দেখা করি। আল জাজিরা যেটা দিয়েছে সেটা সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে দিয়েছে।’
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আর্মি এভিয়েশন গ্রুপে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী সেনাপ্রধানকে নিয়োগ দিয়েছেন এবং কেউ যদি সেনাপ্রধানকে অবজ্ঞার চেষ্টা করেন তা প্রধানমন্ত্রীকে অবজ্ঞার সমান।
আরও পড়ুন: আল-জাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানাল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
হাইকোর্টের নির্দেশ পেলে আল জাজিরার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: তথ্যমন্ত্রী
সেনাবাহিনী ও সরকার যাতে তার কারণে বিব্রত না হয়, সে ব্যাপারে তিনি পূর্ণ সচেতন বলে উল্লেখ করেন জেনারেল আজিজ।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো একটি প্রতিষ্ঠান যেটা জাতির গর্ব, দেশের গর্ব, এই প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চলছে।’
জেনারেল আজিজ বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অত্যন্ত প্রশিক্ষিত ও ওয়েল মোটিভেটেড একটা ফোর্স। আগের থেকে অনেক বেশি সুসংহত। সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড অত্যন্ত ইফেকটিভ। বাহিনীর প্রতিটি সদস্য ঘৃণাভরে এ ধরনের অপচেষ্টা অতীতেও প্রত্যাখ্যান করেছে, এখনও করছে। বর্তমানে যা আছে তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে।’
‘আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে চাই যে এই জাতীয় প্রচার এর কমান্ডের শৃঙ্খলার উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সংবিধান সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সরকারের প্রতি অনুগত এবং সরকারের যে কোনো আদেশ অনুসরণ করতে প্রস্তুত,’ বলেন তিনি।
তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে অপপ্রচার সম্পর্কে শিগগিরই একটি সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুরে ধরা হবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আল জাজিরা নিষিদ্ধের দাবি বিএফইউজে’র
আল জাজিরার প্রতিবেদন অপপ্রচারের নোংরা বহিঃপ্রকাশ: কাদের
আল জাজিরার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ: মোমেন
তিনি বলেন, আপনারা যা কিছু শুনছেন তারা এগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে কাটপিস এবং অন্যান্য জিনিস যোগ করে করেছে। কিন্তু তাতে এদের কোনো উদ্দেশ্য হাসিল হবে না।
আল জাজিরায় গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়, যা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। প্রতিবেদনে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সরকারিভাবে এ প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এ প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে আল জাজিরা টিভি নেটওয়ার্কের ওই প্রতিবেদনটিকে অসত্য ও বানোয়াট বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে আল জাজিরার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
সম্প্রতি তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আইনি পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করব। আমরা এটি খতিয়ে দেখব। যেখানে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে সেখানে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারি। দেখা যাক।’