স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালের কাঙ্ক্ষিত সেবা বাদ দিয়ে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন সম্ভব না।
তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার মান এখনও উন্নত নয়। উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবাতেই আমাদের মূল ঘাটতি রয়ে গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদীর একটি বেসরকারি রিসোর্ট সেন্টারে এক বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: যারা দেশ চায়নি তারাই আবার এদেশের ক্ষমতায় যেতে চায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাহিদ মালেক বলেন, উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর অনেক জায়গায়ই মেশিন নষ্ট ছিল। কিছু জায়গায় মেশিনই ছিল না। লোকবলের তীব্র অভাব ছিল। উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তাররা বদলি নিয়ে ঢাকায় বা জেলা পর্যায়ে চলে যেত।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তনে উপজেলা পর্যায়ে আমরা বিশেষ নজর দিয়েছি। নষ্ট মেশিন মেরামত এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন মেশিন কেনা হয়েছে। তদবির করে উপজেলা পর্যায় থেকে বদলি নিয়ে ঢাকায় আসা বন্ধ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত টেকনিশিয়ান ও ফার্মাসিস্ট নিয়োগের কাজও চলমান।
এছাড়া উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলো শয্যা বৃদ্ধিসহ নানাবিধ কাজ করে উপজেলা পর্যায়ের সরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান দ্বিগুণ বাড়ানো হচ্ছে।
কারণ আমরা বুঝে গেছি, উপজেলা পর্যায়ে সেবার মান না বাড়িয়ে দেশের মানুষের জন্য কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা অসম্ভব।
স্বাস্থ্যখাতের সেবার মান বৃদ্ধি করার গুরুত্ব তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়। অনেক টাকা খরচ করে নিঃস্ব হয়। অথচ আপনাদের (চিকিৎসক ও হাসপাতাল পরিচালক, স্বাস্থ্যখাতের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা) সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা বাড়লে এটি বন্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, এমনভাবে সেবা দিতে হবে যাতে আগামীতে বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিতে বিদেশিরা বাংলাদেশে আসে। আপনারা করোনা মোকাবিলায় সফল হয়েছেন। একটু আন্তরিক হলে চিকিৎসা সেবাতেও সফল হবেন।
তিনি বলেন, এখন শুধু আপনাদের (চিকিৎসক ও হাসপাতাল পরিচালক, স্বাস্থ্যখাতের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা) সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা লাগবে। সরকার আপনাদের জন্য সবকিছুই করবে। কিন্তু আপনাদের এই আন্তরিকতা থাকতে হবে মন থেকে।
তিনি আরও বলেন, যিনি যে হাসপাতাল বা সরকারি স্বাস্থ্যখাত পরিচালনায় দায়িত্ব পাবেন তাকে সেই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার সকল দায়ভার নিতে হবে।
এছাড়া আপনাদের একটু প্রচেষ্টাতেই দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবেন। মানুষের অনেক কষ্টের টাকাও বেঁচে যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক আহমেদুল কবীর।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া। এছাড়া সভায় ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার সিভিল সার্জনস, জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, এবং ৭৬টি উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: এ বছরই দেশের সব হাসপাতালে সান্ধ্যকালীন সেবা চালু হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বেসরকারি হাসপাতালে ৮০% সিজার, মেনে নেওয়া যায় না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী