প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেছেন, দেশের উপকূলীয় এলাকা থেকে গ্যাস অনুসন্ধানের তাৎক্ষণিক কোনো সম্ভাবনা না থাকায় আমদানিকৃত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর নির্ভরতা অব্যাহত থাকবে।
রবিবার ঢাকায় বাংলাদেশ এনার্জি সোসাইটি (বিইএস) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি একথা বলেন।
ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, সরকার সারাদেশে আরও ভাসমান স্টোরেজ বা টার্মিনাল এবং রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এফএসআরইউ হলো এলএনজি টার্মিনাল যা তরল আকারে গ্যাস আমদানি করতে ব্যবহৃত হয়। স্থানীয় সরবরাহ নেটওয়ার্কে ছেড়ে দেয়ার আগে এটিকে সেখানে পুনরায় গ্যাসীকরণ করা হয়।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপে বিদ্যমান দুটি এফএসআরইউ ছাড়াও ভূমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের জন্য পটুয়াখালী ও ভোলার পায়রায় আরও জায়গা নির্ধারণ করা হচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে আরও এলএনজি আমদানি করতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
বর্তমানে, বাংলাদেশের এলএনজি আমদানির জন্য কাতার এবং ওমানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি রয়েছে এবং এটি স্বল্পমেয়াদী ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক স্পট বাজার থেকে তরলীকৃত গ্যাস আমদানি করে।
পড়ুন:দীর্ঘ মেয়াদে কাতার থেকে এলএনজি কিনতে চায় বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
‘বর্তমান জ্বালানি সংকট– বাংলাদেশের জন্য এগিয়ে যাওয়ার পথ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনার উপস্থাপনা করেন বিইএস সভাপতি ও সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ তামিম, বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসআরইএ) সভাপতি দীপাল বড়ুয়া। এফবিসিসিআই-এর এনার্জি স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশীদ, বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) সভাপতি ইমরান করিম, সামিট গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও বিইএসের সহ-সভাপতি এএসএম আলমগীর কবির।
অধ্যাপক এম তামিম বলেন, বর্তমান জ্বালানি সংকটের ওপর নির্ভর করে কোন সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না, কারণ এটি বেশিদিন নাও চলতে পারে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী তেল, এলএনজির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে: মোমেন
বরং দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দীপাল বড়ুয়া বলেন, বর্তমান জ্বালানি সংকটে নবায়নযোগ্য জ্বালানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, তিনি রাউজানে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন যেখানে সকাল ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না।
এফবিসিসিআই নেতা এবং বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনকারী এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের সিইও হুমায়ুন রশীদ বলেছেন, অন্য কোনও মন্ত্রণালয়ের বর্তমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সম্পর্কে কথা বলা উচিত নয়। কারণ এটি মানুষের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করে।
তিনি দাবি করেন, আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের সর্বকালের সেরা সময় পার করছি।
বিআইপিপিএ সভাপতি ইমরান করিম বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারি খাতের ভূমিকা বাড়ছে এবং এটি দেশের বিদ্যুত খাতে ৩৩ শতাংশ অবদান রাখছে।
আরও পড়ুন: এলএনজি আমদানিতে জিডিএফ থেকে ২০০০ কোটি টাকা পাবে পেট্রোবাংলা