দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রোল মডেল হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডি ভবনে আয়োজিত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি এলজিইডি শহর ও নগর অঞ্চলেও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। নিজ অধিদপ্তরের কার্যক্রমের পাশাপাশি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। বর্তমানে যে সকল উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হাতে নেয়া হয়েছে, তা অন্যান্য সরকারের আমলের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে এই প্রতিষ্ঠানটির অনস্বীকার্য।
তিনি জানান, সকল প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। অজুহাত দিয়ে প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি করা যাবে না। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হবে না। নিম্নমানের কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিম্নমানের কাজ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
তাজুল ইসলাম প্রকল্প পরিচালকদের নিয়মিত সাইট ভিজিট এবং কাজের গুণগত মান যাচাই-বাছাই করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়া, মাঠ পর্যায়ের কর্মকাণ্ড নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য সকল স্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন তিনি।
নির্মাণ সামগ্রীর গুণগতমান অক্ষুণ্ন রাখতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ইটের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেক জেলা প্রশাসকের নিকট চিঠি দেয়া হয়েছে। কোন ইটভাটার মালিক যদি গুণগত মানসম্পন্ন ইট উৎপাদন না করে তাহলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ, ইউনিয়ন পরিষদ এবং উপজেলা রাস্তা ও ব্রিজের স্ট্রাকচারাল ডিজাইন নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। রাস্তায় কি পরিমাণ এবং কি ধরনের গাড়ি চলাচল করবে তা আমলে নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে অবকাঠামোগত কাজ করতে হবে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে গুরুত্ব অনুযায়ী নতুন নতুন প্রজেক্ট নিতে হবে।
যেসব প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা কম সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে না নেয়ার জন্য সকল প্রকল্প পরিচালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
কর্মকর্তাদের পারফরমেন্স মূল্যায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, শুধু শাস্তি দিলে হবে না, যারা ভালো কাজ করবে তাদেরকে পুরস্কৃত করতে হবে। নতুবা ভালো কাজে আগ্রহী হবে না। দক্ষ জনবল তৈরি করতে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে হলে দক্ষ জনবলের বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
এসময় এলজিইডির উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের ওপর একটি উপস্থাপনা প্রদান করা হয়। উপস্থাপনায় এলজিইডির বিভিন্ন ইউনিটের কার্যক্রম সম্পর্কে মন্ত্রীকে অবহিত করেন প্রধান প্রকৌশলী।
এর আগে, মন্ত্রী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সৌধ’ এর উদ্বোধন করেন।
এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। এছাড়া, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীর প্রত্যেক বাসা-বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী