কক্সবাজার শহরে এক তরুণীকে আদালত চত্বর থেকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ওই তরুণী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এ মামলা করেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, ওই নারীর লিখিত এজাহারটি ১৫ মার্চ দুপুরে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ফিরোজ আহমদ, রাসেল উদ্দিন, নুরুল ইসলাম ও মো. শরীফ। ৯ জনের মধ্যে পাঁচজন অজ্ঞাতনামা।
দায়ের করা এজাহার থেকে জানা যায়, ফিরোজ ও শরীফের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ ১৪ মার্চ দুপুরে তিনি কক্সবাজার আদালত এলাকায় এক আইনজীবীর কার্যালয় থেকে বের হলে আসামিরা তাকে ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে ফিরোজ ও শরীফসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন এসে তার হাত-পা ও মুখ চেপে ধরে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। ফিরোজ ওই তরুণীর স্বর্ণালংকার ও টাকা ছিনিয়ে নেয়।
আরও পড়ুন: অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে ঢাকায় আটক ৪
এরপর শহরের বাহারছড়া এলাকায় ফিরোজের আত্মীয় ফজল কাদেরের বাসায় নিয়ে আটকে রেখে ফিরোজ ও শরীফ তাকে ধর্ষণ করে। পরে একইভাবে নুরুল ইসলামও তাকে ধর্ষণ করে তার মুঠোফোন ও টাকা নিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর রাসেল উদ্দিন ওই কক্ষে এসে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেয়। ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে অথবা বাড়াবাড়ি করলে মানব পাচার মামলায় চালান করে দেয়ার হুমকি দেয় রাসেল। একপর্যায়ে রাসেলও ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের কারণে ওই তরুণী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে রাসেল ও শরীফ তাকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে আসে। এ দৃশ্য দেখে রাস্তায় থাকা এক ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল দিলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে।
তরুণীর দাবি, ফিরোজ ও রাসেল উদ্দিন পুলিশের পূর্বপরিচিত। তাই সোমবারের ঘটনার পর থেকে থানা–পুলিশের ভূমিকা ‘রহস্যজনক’ বলে অভিযোগ করেন তিনি। প্রভাবশালী মহল ও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায় থাকা নেতাদের মাধ্যমে ঘটনাটি মিটমাট করতে চাপ দেয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে ওসি শেখ মুনীর বলেন, মামলায় চারজন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করবে।