সম্প্রতি করোনা প্রতিষেধক বাজারে আসা নিয়ে বিশ্ব ও দেশব্যাপী এক আশাবাদ সৃষ্টি হয়েছে। তবে টিকার লভ্যতা, অর্থায়ন, বিতরণ, সংরক্ষণ এবং পরবর্তী সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেজন্য তথ্যের স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু জবাবদিহিতার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
রবিবার আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ টিকা বাংলাদেশে কে, কখন, কীভাবে পাবে?’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে এসমস্ত বক্তব্য উঠে আসে।
আরও পড়ুন: করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকায় অর্থনীতি সচল আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ-এর আয়োজনে সংলাপটি আয়োজিত হয়। এর সহ-আয়োজক ছিলো বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ।
প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ক মিজ আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্যে এই সংলাপের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এর আহ্বায়ক ড. মোশতাক রাজা চৌধুরী তার এক প্রতিবেদনে বলেন, চলমান কোভিড অতিমারিকে মোকাবিলা করতে শিগগিরই বাজারে আসছে প্রতিষেধক। সেই টিকা প্রাপ্তিতে টিকা জাতীয়তাবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। ধনী দেশগুলো বিপুল পরিমাণে অগ্রীম প্রতিষেধক কিনে নিচ্ছে। অথচ করোনা থেকে মুক্তি পেতে ধনী-দরিদ্র সব দেশেই ভ্যাকসিনের সমবণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য ভ্যাকসিন প্রাপ্তির প্রাধিকার নির্ধারণে বৈষম্য দূর করা এবং মূল্য নির্ধারনে স্বচ্ছতা একান্ত প্রয়োজনীয়। কোভিড টিকা কর্মসূচির জন্য বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তুত সেটাও বিবেচনায় আনতে হবে। আর তাই কমিউনিটিকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায় সেজন্য আমাদের এখন থেকেই চিন্তা করতে হবে।
আরও পড়ুন:করোনার ভ্যাকসিন কিনতে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের সাথে সরকারের চুক্তি
আইসিডিডিআর,বির ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান ফেরদৌসী কাদরী বলেন, বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সন্দেহ-উদ্রেকের ঊর্ধ্বে উঠে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সর্বাবস্থায় টিকা কর্মসূচিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য প্রথমে উপযুক্ত গ্রহীতা নির্বাচন করতে হবে। এরপরে মনিটরিং করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ টিকা বিতরণে বাংলাদেশ কি প্রস্তুত?
ইউনিসেফের কোল্ড চেইন স্পেশালিস্ট জনাব হামিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে টিকা সংরক্ষণ ও বিতরণের জন্য সুষ্ঠু নীতিমালা ও তার বাস্তবায়ন আবশ্যক।
সিপিডির ফেলো রওনক জাহান পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দক্ষতা ও সক্ষমতার অভাবের কথা তুলে ধরেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুমানা হক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রফেসর রশিদ-ই-মাহবুব প্রতিষেধক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজ নিজ কর্মীদেরকে স্ব-উদ্যোগে টিকা বিতরণের উৎসাহ দেন।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ টিকা কোনো ‘জাদুর কাঠি’ নয়: ডব্লিউএইচও
প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। তিনি আরও একবার তথ্যপ্রবাহে স্বচ্ছতা, বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জবাবদিহিতা ইত্যাদির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
এই সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, উন্নয়নকর্মী, এনজিও প্রতিনিধি, চিকিৎসক, সমাজকর্মী এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ শতাধিক বিশিষ্ট নাগরিক।