কয়লা বিদ্যুৎ ব্যবহার কমাতে জলবায়ু সম্মেলনে একমত হয়েছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে এর কোন বিকল্প নেই। সদিচ্ছা থাকলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন কঠিন কিছু নয়।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) গ্লাসগো সময় দুপুর ১টায় মন্ত্রী পর্যায়ের প্ল্যানারি সেশনে ২০৪১ সালের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করতে একমত হন বিশ্ব নেতারা।
তারা বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন কঠিন নয়। কয়লা ব্যবহারে অন্যতম দেশ ইন্দোনেশিয়াও তাদের অবস্থান থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সহনশীলতা বাড়াতে সহায়তা দিতে আগ্রহী অস্ট্রেলিয়া
মন্ত্রী পর্যায়ের প্ল্যানারি সেশনে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বাড়াতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। ভারত ও নেপাল থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমদানিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার।
তিনি আরও বলেন, অত্যাধিক ঘনবসতি ও কৃষি নির্ভরতার কারণে সোলার প্যানেল নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন বাংলাদেশে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সে কারণে পার্শ্ববর্তী নেপাল, ভারত ও ভুটান থেকে বিদুৎ আমদানির কথা ভাবছে বাংলদেশ।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব নেতারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শেষ দেখছেন এবং ক্লিন এনার্জির বিবর্তন দেখছেন।
জীবাশ্ম জ্বালানিগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিবেশ দূষণকারী হচ্ছে খনিজ কয়লা যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কয়লা বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী নারীরা: প্রধানমন্ত্রী
২৬তম জলবায়ু সম্মেলনে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। প্ল্যানারি সেশনে বিভিন্ন দেশের জ্বালানি প্রধানরা বলেন,এ প্রক্রিয়া থেকে সরে আসতে না পারলে জলবায়ু মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাবে।
ব্রিটিশ জ্বালানি মন্ত্রী বলেন, এক সময় কয়লা থেকে ৪০ ভাগ বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো হতো। এখন সেটা ২৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০৩০ সালে কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদন শূণ্যের কোঠায় নেমে আসবে।
যুক্তরাজ্যের জ্বালানিমন্ত্রী বলেন, তার দেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে রোড ম্যাপ তৈরি করেছে।
সবাই একমত হলেই সবুজ বিশ্ব গড়ে তোলা সম্ভব বলেন বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা। তাছাড়া বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে আশার আলো দেখছেন বাংলাদশের পরিবেশবিদরা।
গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে অবস্থানরত বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার ইউএনবিকে বলেন, দেরিতে হলেও বাংলাদেশ কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্ভরতা থেকে সরে আসায় বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। তবে অঙ্গীকারটি যাতে বাস্তবায়িত হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।