তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও শেষকৃত্যে অংশ নিতে বুধবার ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। খালেদা জিয়ার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ভারত সরকার ও দেশটির জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এস জয়শঙ্কর ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান।
বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণব ভার্মাও উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত তৎকালীন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে ভারত সফর করেন খালেদা জিয়া।
তার আগে, বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সর্বশেষ সরকারি ভারত সফর ছিল ২০০৬ সালেল মার্চে। সে সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের আমন্ত্রণে ২০ থেকে ২২ মার্চ তিনি রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে অবস্থান করেন।
ওই সফরে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণাঙ্গ বিষয়াবলি নিয়ে ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিস্তৃত আলোচনা হয়। একইসঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতেও মতবিনিময় হয়।
এদিকে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মোদি লেখেন, ‘ ‘ঢাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা এই বিয়োগান্তক ক্ষতি সয়ে নেওয়ার জন্য তার পরিবারকে ধৈর্য দান করুন।’
বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের উন্নয়ন ও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
২০১৫ সালে ঢাকায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে উষ্ণ সাক্ষাতের কথা স্মরণ করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘তার দূরদর্শিতা ও উত্তরাধিকার দুই দেশের অংশীদারত্বকে ভবিষ্যতেও আমাদের পথ দেখাবে। তার আত্মা শান্তিতে থাকুক।’
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সংলগ্ন স্থানে আজ দুপুর ২টায় খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর দুপুর সাড়ে ৩টায় তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
খালেদা জিয়ার দাফনের সময় জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সেইসঙ্গে দাফনে উপস্থিতদের কোনো ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।