বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত জরুরি প্রস্তুতি সভায় এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৬০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মহানগরে ১১৬টি এবং জেলায় ৪৯৩টি। এছাড়া ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত, সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত
জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জেলার ত্রাণসামগ্রী মজুদ পরিস্থিতি সভায় উপস্থাপন করেন।
সভায় জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে জেলা প্রশাসনের কাছে ত্রাণ হিসেবে নগদ ২২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, চাল ২৪৪ মেট্রিক টন, গোখাদ্যের জন্য ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা, শিশুখাদ্য বাবদ ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা, শুকনো খাবার ৪৭২ ব্যাগ, কম্বল ১ হাজারটি এবং ৪৭ হাজার ওরস্যালাইন মজুত আছে।
সম্ভাব্য পরিস্থিতি পর্যালোচনাক্রমে প্রয়োজনের নিরিখে এসব সামগ্রী দ্রুত বরাদ্দ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসকের বাস ভবন থেকে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়ালি ওই সভায় চট্টগ্রামের জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধান, সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন এনজিও, গণমাধ্যমকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: সন্ধ্যা নাগাদ মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে
জেলা প্রশাসক জরুরি সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও সিটি করপোরেশনে কন্ট্রোল রুম খোলা, উপজেলা পর্যায়ে দ্রুত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা আয়োজন, স্ব স্ব এসওপি অনুযায়ী সব দপ্তরের কার্যক্রম গ্রহণ, বিভিন্ন এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, গণমাধ্যমকে দুর্যোগ মোকাবিলায় অংশগ্রহণ, উপকূলবর্তী ও পাহাড়ি এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম চলমান রাখা, যেকোনও জরুরি প্রয়োজনে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার সঙ্গে এবং জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের নম্বরে যোগাযোগ করার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমাদের বিভিন্ন টিম মাইকিং করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খোলা আছে। পাশাপাশি শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সব পর্যায়ের প্রস্তুতি নিয়েছি।’
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে: প্রতিমন্ত্রী