বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে করোনাভাইরাস নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যারা চীন থেকে ফিরে আসতে চান তাদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এমনকি যারা ছুটিতে চীনে গেছেন আপাতত তাদের ভিসা দেয়াও স্থগিত রাখা হয়েছে।’
‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের নাগরিকদের দেশে ফিরে আসার পরিবর্তে সেখানে থাকাই ভালো এবং আমাদের দূতাবাস তাদের প্রয়োজনীয় সব সহায়তা সরবরাহ করবে। সেখানে তারা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আরও ভালো চিকিৎসা পাবেন। তাই আমরা এখনই তাদের দেশে ফিরতে নিরুৎসাহিত করছি,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, চীনা নাগরিকদের অনএরাইভেল ভিসা আপতত বন্ধ রয়েছে। চীন থেকে যারা ভিসা নিয়ে আসবেন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
এছাড়া, যারা বাংলাদেশ থেকে এখন চীনে যেতে চান তাদেরও নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে বলে জানান জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে যারা চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছেন তাদের একটি কার্ড দেয়া হয়েছে। যাতে তারা অসুস্থ হলে আমাদের দ্রুত জানাতে পারেন। পাশাপাশি তাদের নিজ কর্মস্থান থেকে ১৪ দিন বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।’
দেশের কোথাও চীনের নাগরিক অসুস্থ হলে তা সিভিল সার্জন বা স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসীকে সচেতন থাকতে হবে। দেশে কেউ আক্রান্ত হলে তাদের চিকিৎসায় সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে কোনো চীনা বা চীনে কোনো বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি: রাষ্ট্রদূত
চীন থেকে ফেরত আনা ৩১২ বাংলাদেশিকে আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ছেড়ে দেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। তাই দেশের কোথাও কেউ যদি আক্রান্ত হন তাহলে সাথে সাথে খবর দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চীনা নাগরিকদেরও সচেতন থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার তাদের সব ধরনের সহায়তা দেবে।’
জাপান সরকার বাংলাদেশকে ৭০ লাখ মাস্ক দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী না থাকায় মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। তবে নিরাপত্তান জন্য চাইলে যে কেউ পরতে পারেন। আর মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজন হলে আমরা জানাব। সে অনুযায়ী আমাদের সরবরাহ আছে।’
‘করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য আমাদের এখানে আগে থেকেই ব্যবস্থা ছিল। সেটাকে আরও আধুনিক করা হয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষার যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। ফলে অল্প সময়ে পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, চীন থেকে আরও ১৭০ বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের সাথে যোগাযোগ করছে। তবে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা না করা যাওয়ায় তাদের ফেরত আনা যাচ্ছে না।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।
কমিশনের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এ পর্যন্ত চীনে ২৮ হাজার ১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং গত ২৪ ঘন্টায় ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।