বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২২ পাস করেছে জাতীয় সংসদ। এই আইনের দ্বারা বিশেষ ক্ষেত্রে গণশুনানি ছাড়াই সরকারকে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার বিরোধী দলের বিরোধীতার মধ্যেই আইনটির সংশোধনী পাস করে জাতীয় সংসদ।
জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাব ঠিক করার পরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে বিলটি উত্থাপন করে। এরপর কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
আরও পড়ুন: হাট ও বাজার (প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা) বিল জাতীয় সংসদে
তবে বিলটি পাসের প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।
২০০৩ আইনের সংশোধনের ফলে, গ্যাস ও বিদ্যুতের নতুন মূল্য নির্ধারণে মন্ত্রণালয়কে আর বিইআরসি’র মাধ্যমে গণশুনানির প্রয়োজন হবে না।
এর আগে ২৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভা কমিশনের গণশুনানি এবং সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা না করে সরকারকে বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজস্বভাবে জ্বালানি শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়ার জন্য বিইআরসি আইন-২০০৩ -এর একটি সংশোধনী অনুমোদন করে।
বিলে বলা হয়েছে, 'এই আইনের অন্য কোনো বিধান থাকা সত্ত্বেও, জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার বিশেষ ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে শুল্ক নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সামঞ্জস্য করতে পারে। কৃষি, শিল্প, সার, বাণিজ্য ও গার্হস্থ্য কাজে জনগণের চাহিদার আলোকে যাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ এবং সঞ্চালন নিশ্চিত করা যায়।'
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, পানির ট্যাংক ফুটো থাকলে কখনও তা ভরাট করা যায় না। যতদিন ভাড়া বিদ্যুৎ থাকবে এবং কুইক রেন্টাল থাকবে ততদিন লোকসান বাড়তে থাকবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'ভর্তুকি কি? মন্ত্রী ব্যাখ্যা করবেন। ভর্তুকির নামে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এই টাকা দিয়ে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিল পরিশোধ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদ এখন ‘একদলীয় ক্লাব’: ফখরুল
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির বলেন, সরকার গত ১৪ বছরে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
এ আইনকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের সংকটের কারণ লুটপাট ও দুর্নীতি।
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সামনে রমজান মাস। এর আগে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।
তিনি বলেন, এই বিল জনস্বার্থবিরোধী।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, ঢাকায় দিনের বেলা গ্যাস থাকে না।
তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে তিন-চার ঘণ্টা গ্যাস নেই। গ্রামের অবস্থা আরও খারাপ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়াই ভালো।’
আরও পড়ুন: দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ১৭ লাখ: জাতীয় সংসদে প্রতিমন্ত্রী