সিলেটের বিশ্বনাথে দুই প্রবাসী ভাইয়ের মধ্যে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় নারীসহ ২১ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রাম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আটকের পর ২১ জনকে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ এবং অপর সাতজন নারীকে নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল মন্নান উরফে মসকুদ আলী ও তার ভাই আব্দুল কদ্দুছ উরফে চিকন আলীর মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষে আদালতে মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। বিষয়টি নিস্পত্তি করতে স্থানীয় পঞ্চায়েতসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিস্পত্তির উদ্যোগ নেন পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানও।
আরও পড়ুন: বিপিএল ২০২৩: জয় দিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সের যাত্রা শুরু
এরই মধ্যে শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে উভয় পক্ষের লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করলে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ উভয় পক্ষের প্রবাসীসহ ২৮জন নারী-পুরুষকে আটক করে থানায় নিয়ে নিয়ে যায়। এরপর তাদের মধ্যে ২১জনকে শনিবার বিকালে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ এবং মানবিক দিক বিবেচনায় শিশুসহ সাত নারীকে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের মৃত মরম আলীর ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল কদ্দুছ উরফে চিকন আলী (৬০), একই গ্রামের মৃত কটু মিয়ার ছেলে টুনু মিয়া (৩২), সাজু মিয়া (৩০), মৃত হাফিজ আলীর ছেলে আবুল মিয়া (৪৫), নানু মিয়ার ছেলে শরীফ আহমদ (১৯), আলকাছ আলীর ছেলে জয়নাল মিয়া (৩২), মৃত খুর্শেদ আলীর ছেলে সেবুল আহমদ (৪৮), আর্শ্বব আলীর ছেলে রোহান উদ্দিন জাফর (১৯), মৃত ছিদ্দিক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০), নানু মিয়ার স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩০), জুনু মিয়ার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (৩৫), চান্দশীরকাপন গ্রামের মৃত আমজদ আলীর ছেলে ছালেক মিয়া (২৫), ধীতপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর মেয়ে রিয়া বেগম রুবি (৩০), দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জালালপুর পূর্বভাগ গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে ফয়ছল আহমদ (২৬), ওসমানীনগর উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের আইন উল্লাহর ছেলে রাসেল উল্লাহ (২৪), খাপন খালপাড় গ্রামের মৃত ইসমাইল আলীর ছেলে লাল মিয়া (২৪), মৃত আমজদ খানের ছেলে কামরুল খান (২৪), মোল্লারগাঁও গ্রামের আব্দুল মালিকের ছেলে আব্দুল মতিন (৪৩) সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া গ্রামের মৃত আফিজ আলীর ছেলে কফিল আহমদ (২৩) ও কুবাজপুর গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে রাসেল মিয়া (২৪)।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘উভয় পক্ষের লোকজন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়েই আমরা অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ২৮ জনকে আটক করে থানায় আনা হয়। এরপর তাদের মধ্যে ২১ জনকে আদালতে পাঠানো হয় এবং সাতজন নারীকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।’
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে জার্মান তরুণী সিলেটের বিশ্বনাথে, বর্ণিল আয়োজনে বিয়ে